নেপালজুড়ে তরুণ প্রজন্মের ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে দেশটির প্রধানমন্ত্রী কেপি ওলি পদত্যাগ করেছেন।
মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাজধানী কাঠমান্ডুর পাশাপাশি বিভিন্ন জেলায় জেন-জি বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরার পদ ছাড়ার ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী ওলি। এর আগে দেশটির সেনাবাহিনী প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে কেপি ওলির প্রতি আহবান জানায়।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, নেপালের সরকারি সূত্র এই পদত্যাগের খবর নিশ্চিত করেছে।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, আজও বেশ কয়েকজন হাই প্রোফাইল রাজনীতিকের বাসভবন, যার মধ্যে ওলি এবং প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শের বাহাদুর দেউবার বাড়িও রয়েছে, সেগুলো আক্রান্ত ও ভাঙচুর করা হয়েছে।
রাজনৈতিক দলগুলোর সদর দপ্তরও হামলার শিকার হয়েছে।
সিভিল সার্ভিস হাসপাতালের কার্যনির্বাহী পরিচালক মোহন রেগমি বিবিসিকে জানিয়েছেন, মঙ্গলবারের বিক্ষোভে দুই জন মারা গেছেন।
তিনি বলেন, বর্তমানে ৯০ জন ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
গত বছর নেপালের সুপ্রিম কোর্ট দেশটিতে সক্রিয় সামাজিক যোগাযোগমগুলোকে সরকারিভাবে নিবন্ধিত হওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। হাইকোর্টের সেই নির্দেশের ভিত্তিতে প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলির নেতৃত্বাধীন সরকার দেশে সক্রিয় সামাজিক যোগাযোগামাধ্যমগুলোকে নিবন্ধনের জন্য গত ২৮ আগস্ট থেকে ৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল।

কিন্তু নির্ধারিত সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ার পরও সরকারিভাবে নিবন্ধন না করায় ফেসবুক, এক্স, ইনস্টাগ্রাম, ইউটিউবসহ ২৬টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা দেয় সরকার। গত ৪ সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর হয়েছে এ নিষেধাজ্ঞা।
এদিকে, সরকারের এই নিষেধাজ্ঞা ব্যাপকভাবে ক্ষুব্ধ করে দেশটির স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া শিক্ষার্থী এবং তরুণ প্রজন্মকে। জেন জি নামে পরিচিত এই তরুণ প্রজন্ম গত ৪ সেপ্টেম্বর থেকেই সরকারের এই নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছিল।
অবশেষে রোববার থেকে শুরু হয় আন্দোলন এবং সোমবার তা রীতিমতো উত্তাল হয়ে ওঠে। রাজধানী কাঠমান্ডুতে কারফিউ অমান্য করে বিক্ষোভে নেমেছেন শিক্ষার্থী-জনতা। শুরুর দিকে এই বিক্ষোভে শীর্ষ দাবি হিসেবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অ্যাপের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়টি এলেও বর্তমানে এটি প্রায় পুরোপুরি সরকারবিরোধী আন্দোলনে পরিণত হয়েছে। কাঠমান্ডুর বাণেশ্বরসহ বিভিন্ন এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে এ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ২০ জন, আহত হয়েছেন আরও বহু সংখ্যক।
এর আগে বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগ করেন নেপালের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রমেশ লেখক।