স্টাফ রিপোর্টারঃ
সাতক্ষীরার কলারোয়ায় ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা, আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা মামলায় সাবেক এমপি হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ তিনজনের সর্বোচ্চ ১০ বছর করে এবং চার্জশিটভুক্ত বাকী ৪৭ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সাথে তাদের জরিমানাও করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার আলোচিত এ মামলায় জেল হাজতে থাকা ৩৪ জন আসামির উপস্থিতিতে রায় ঘোষণা করেন সাতক্ষীরার মুখ্য বিচারিক হাকিম মো. হুমায়ুন কবীর।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ধর্ষণের শিকার এক মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীকে দেখতে ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট সাতক্ষীরার কলারোয়ায় যান আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। সড়ক পথে ঢাকায় ফেরার পথে সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলা বিএনপি অফিসের সামনে শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলার ঘটনা ঘটে। শেখ হাসিনাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হয়। বোমা বিস্ফোরণ ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে।
এরপর হাইকোর্টে আবেদন করে ২০১৪ সালে মামলা দায়ের করা হয়। ২০১৫ সালে এ ঘটনায় আদালতে চার্জশিট দেয়া হয়। এর মধ্যে হত্যাচেষ্টা মামলায় এক আসামি রকিব ওরফে রাকিবুর রহমানের বয়স ঘটনার সময় ১০ বছর ছিলো উল্লেখ করে হাইকোর্টে মামলা বাতিলে আবেদন করা হয়।
২০১৭ সালের ২৩ আগস্ট ওই আবেদন হাইকোর্ট স্থগিতাদেশ দিয়ে রুল জারি করেন। এ রুলের ওপর শুনানি শেষে ৮ অক্টোবর রুলটি খারিজ করে রায় দেয় হাইকোর্ট। এরপর হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল করে আসামিপক্ষ।
সবশেষ গত বছরের ২৪ নভেম্বর দায়ের করা মামলা বাতিল চেয়ে এক আসামি আবেদন করলে আপিল বিভাগ তা খারিজ করে দেন। ফলে বিচারিক আদালতে এ মামলা চলতে আর কোন বাধা নেই বলে জানিয়েছিলেন অতিরিক্ত এটর্নি জেনারেল এসএম মুনির।
গত ২৭ জানুয়ারি যুক্তিতর্ক শেষে কাঠগোড়ায় থাকা ৩৪ জনকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়ে ৪ ফেব্রুয়ারি রায়ের জন্য দিন ধার্য করেন মুখ্য বিচারিক হাকিম মো. হুমায়ুন কবীর। মামলায় ১৬ জন আসামি পলাতক রয়েছেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, সাতক্ষীরা ১ আসনের সাবেক সাংসদ হাবিবুল ইসলাম হাবিব, আশরাফ হোসেন, নজরুল ইসলাম, মো. আব্দুর রাজ্জাক, শেখ তামিম আজাদ মেরিন, মো. আব্দুর রকিব মোল্যা, মো. আক্তারুল ইসলাম, মো. আব্দুল মজিদ, মো. হাসান আলী, ময়না, মো. আব্দুস সাত্তার, তোফাজ্জেল হোসেন সেন্টু, মো. জহুরুল ইসলাম, গোলাম রসুল, অ্যাডভোকেট মো. আব্দুস সাত্তার, আব্দুস সামাদ, মো. আলতাফ হোসেন, শাহাবুদ্দিন, মো. সাহেব আলী, সিরাজুল ইসলাম, রকিব, ট্রলি শহীদুল, মো. মনিরুল ইসলাম, শেখ কামরুল ইসলাম, ইয়াছিন আলী, শেলী, শাহিনুর রহমান, দিদার মোড়ল, সোহাগ হোসেন, মাহাফুজুর মোল্লা, আব্দুল গফফার গাজী, রিঙ্কু, অ্যাডভোকেট মো. আব্দুস সামাদ, টাইগার খোকন ওরফে বেড়ে খোকন।
পলাতক আসামিরা হলেন, আব্দুল কাদের বাচ্চু, মফিজুল ইসলাম, মো. আলাউদ্দিন, খালেদ মঞ্জুর রোমেল, আরিফুর রহমান, রিপন, ইয়াছিন আলী, রবিউল ইসলাম, মাজাহারুল ইসলাম, আব্দুল খালেক, আব্দুর রব, সঞ্জু, নাজমুল হোসেন, জাবিদ রায়হান লাকী, কণক, মো. মাহাফুজুর রহমান।