বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

সদ্যপ্রাপ্ত সংবাদ
আখড়াখোলা বাজারে বারীর অত্যাচরে অতিষ্ঠ ব্যবসায়ীরা : প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা
আখড়াখোলা বাজারে বারীর অত্যাচরে অতিষ্ঠ ব্যবসায়ীরা : প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা

আখড়াখোলা বাজারে বারীর অত্যাচরে অতিষ্ঠ ব্যবসায়ীরা : প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা

মনিরুল ইসলাম মনিঃ

সদর উপজেলার আখড়াখোলা বাজারে সরকারি নির্ধারিত ছাড়াও জোর পূর্বক কয়েক গুণ বেশি ইজারা আদায় করার অভিযোগ উঠেছে আদায়কারী আব্দুল বারীর বিরুদ্ধে। এ বাজারে সাধারণ কৃষক ও জনসাধারণ কৃষিপণ্য বিক্রি করতে গিয়ে নাজেহাল হচ্ছেন। অতিরিক্ত খাজনা দিতে গিয়ে তাদের নাভিশ্বাস উঠছে। এছাড়াও কয়েকবার ডিবি পুলিশের হাতে আটক হওয়া চোরাকারবারি আব্দুল বারীর বিরুদ্ধে বাজারের জমি দখল, নতুন দোকান নির্মাণে চাঁদাদাবিসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। জনসাধারণের জন্য দশ বছর আগে নির্মিত একটি শৌচাগার থাকলেও খাজনা আদায়ের শিডিউলের বাহিরে তিনি জোর পূর্বক ৫-১০ টাকা আদায় করে থাকেন। তার এসকল কর্মকান্ডে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাচ্ছে না দোকানীরা।

বল্লী ইউনিয়ন পরিষদের পাশ্ববর্তী বেতনানদীর তীরে মুক্তিযুদ্ধের কয়েকবছর পর ঝাউডাঙ্গা ইউনিয়নের শেষ সীমানায় আখড়াখোলা বাজার গড়ে ওঠে। বর্তমানে এটি এখন উপজেলার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি বাজার হয়ে উঠেছে। প্রতি রবিবার ও বৃহস্পতিবার বিকালে এখানে হাট বসে। স্থানীয় ক্রেতারা এসে মাছ, মাংস ও তরকারি কিনে নিয়ে যান। এই বাজারে পাশ্ববর্তী এলাকা রায়পুর, ঘরচালা, রামেরডাঙ্গা, কুশোডাঙ্গা, আমতলা গ্রামের কৃষকেররা তাদের উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করেন। বাজারে এক শতাধিক দোকান রয়েছে। কিন্তু বাজারটিতে সরকার নির্ধারিত মূল্যের বাইরে খাজনা আদায়কারী আব্দুল বারী জোর পূর্বক অতিরিক্ত খাজনা আদায় করছেন। এতে এলাকাবাসী, সাধারণ কৃষক ও ব্যবসায়ীরা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন।

অভিযোগ, হাটের দিন এক মণ আলু, বেগুন, পেঁয়াজ, রসুন, মরিচ, শাকসবজিসহ অন্য তরকারি ৭ থেকে ১০ টাকার স্থলে জোর করে ১৫-২০ টাকা আদায় করছেন আদায়কারী আব্দুল বারী। এ ছাড়া তরকারির স্থায়ী দোকানগুলো থেকে প্রতিদিন গড়ে আদায় করা হচ্ছে ২০-৩০ টাকা।

অভিযুক্ত আদায়কারী আবুল বারী জানান, আখড়াখোড়া বাজারের জমি ও মাটি আমার টাকা দিয়ে কেনা। তবে হাটের ইজারাদার আমিনুর ইসলাম দাবি করেন, তার নামে হাট ইজারা নেওয়া হলেও তিনি ইজারা আদায় করেন না। তিনি অতিরিক্ত খাজনা আদায়ের অভিযোগ অস্বীকার করেন।

সম্প্রতি হাটে গিয়ে দেখা যায়, সাধারণ ক্রেতা ও ব্যবসায়ীদের ভিড়ে বাজারটি জমজমাট। কাঁচামাল ব্যবসায়ী সোহাগ হোসেন, হাসান, রউফ, আসাদসহ অনেকেই বলেন, মাল কেনার সময় খাজনা দিতে হয়। আবার মাল খুচরা বিক্রি করতে গেলেও খাজনা দিতে হচ্ছে। কৃষকেরা অভিযোগ করেন, অল্প পরিমাণ পান, সুপারি, কলা নিয়ে এলেও খাজনা দিতে হয়। বাজারে কোনো পণ্য তুললেই খাজনা দিতে হয়। বিক্রি না হলেও জোর করে খাজনা আদায় করা হয়। এ নিয়ে খাজনা আদায়কারীরা সাধারণ কৃষক ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন। অনেক সময় তাদের ওপর চড়াও হন। এ কারণে এ বাজারে মালামাল ওঠা কমে যাচ্ছে।

আখড়াখোলা বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল রউফ বলেন, আমরা সরকার নির্ধারিত খাজনা আদায় করার জন্য ইজারাদারকে কয়েকবার মৌখিকভাবে বলেছি। তারপরও অতিরিক্ত খাজনা আদায় করা হচ্ছে। তাছাড়া বাজারে যেকোনো দোকান ঘর সংস্কার ও ডিসিআর নিয়ে দোকান তৈরী হলেও বারীর টাকা না দিলে ঘর করতে বাঁধা দেন। তার অত্যাচরে অতিষ্ঠ বাজারের ব্যবাসায়ীরা। এ প্রতিকার চেয়ে লকডাউনের পরেই বাজার কমিটির পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দায়ের করবো।

এবিষয়ে সাতক্ষীরা জেলা যুবলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সোহরাব হোসেন সাজু, সদর উপজেলার যুবলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি জাহিদ হোসেন ও ঝাউডাঙ্গা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড আ.লীগের সভাপতি নজরুল ইসলামসহ অনেকেই আদায়কারী আব্দুল বারীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ এনে এসকল কর্মকান্তে অতিষ্ঠ বাজার ব্যবসায়ীসহ এলাকাবাসী। আরো জানান, বাজারে বেতনানদীর তীরে স্থানীয় আ.লীগ অফিস রয়েছে তার পাশে নদীর সাথে ৪৪ শতক জায়গায় একটি মাছের ঘের রয়েছে। যেটা দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় আ.লীগ নেতারা এ ঘেরে মাছ চাষ করে এবং ঐ আ.লীগ অফিসের খরচ বহণ করতে সহায়তা করে। কিন্তু আবুল বারী এ জায়গা জোর পূর্বক দখল করার পায়তারা চালিয়ে যাচ্ছে। তাছাড়াও বাজারে কোনো নতুন দোকান নির্মাণ হলে সে দোকান মালিকের কাছে মোটা অংকের চাঁদাদাবি করে ভয়ভীতি প্রদান করে আদায়কারী আব্দুল বারী। এ বাজারটি সব তার বলে দাবি করে আব্দুল বারী। এসকল কর্মকান্ত থেকে পরিত্রাণ পেতে স্থানীয় আ.লীগ নেতাকর্মীরাসহ ব্যবসায়ীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে জেলা প্রশাসকের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

এবিষয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দেবাশীষ চৌধুরীর সাথে লকডাউনের কারণে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

About The Author

Related posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: কপি থেকে বিরত থাকুন,ধন্যবাদ।