সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪

সদ্যপ্রাপ্ত সংবাদ
সত্যিই কি দুই বছরের মধ্যে বহু মানুষকে হত্যা করবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা?
সত্যিই কি দুই বছরের মধ্যে বহু মানুষকে হত্যা করবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা?

সত্যিই কি দুই বছরের মধ্যে বহু মানুষকে হত্যা করবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা?

নতুন সূর্য ডেস্কঃ

আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, বর্তমান আধুনিক প্রযুক্তির অন্যতম আবিষ্কার। মানুষের বুদ্ধিমত্তা ও চিন্তাশক্তিকে কৃত্রিম উপায়ে প্রযুক্তি নির্ভর করে যন্ত্রের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করাকেই বলা হয় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। বর্তমানে এটি একাডেমিক শিক্ষার ক্ষেত্র হয়ে উঠেছে, যেখানে পড়ানো হয় কীভাবে কম্পিউটার এবং সফটওয়্যার তৈরি করতে হয় যা বুদ্ধিমত্তা প্রদর্শন করবে। কম্পিউটারকে মিমিকস কগনেটিক এককে আনা হয়, যাতে করে কম্পিউটার মানুষের মতো ভাবতে পারে। যেমন, শিক্ষা গ্রহণ এবং সমস্যার সমাধান। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা হল মেশিন দ্বারা প্রদর্শিত বুদ্ধি। কিন্তু এটি বর্তমানে এমন পর্যায়ে চলে গেছে যা নিয়ে নেতিবাচক আশঙ্কাও দেখা যাচ্ছে।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাককে তার প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা ম্যাট ক্লিফোর্ড পরামর্শ দিয়ে বলেছেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এতই বেশি শক্তিসম্পন্ন হয়ে উঠতে পারে যে, মাত্র দু’বছরের মধ্যে তা বহু মানুষকে হত্যা করবে। এসব কথা কল্পবিজ্ঞানে এতদিন বলাবলি হয়েছে। সেখানে মানুষ এবং রোবটকে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে উন্নত বিশ্বের একজন উপদেষ্টা ওই প্রধানমন্ত্রীকে সে বিষয়েই পরামর্শ দিয়েছেন।

ম্যাট ক্লিফোর্ড বলেছেন, স্বল্পমেয়াদী যেসব ঝুঁকি আছে তাও বেশ ভীতিকর। কারণ, সাইবার এবং জীবাণুঅস্ত্র তৈরির ক্ষমতা আছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বা এআইয়ের। এসব জীবাণু অস্ত্রে মৃত্যু হতে পারে অনেক মানুষের। ঋষি সুনাক যখন যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছেন, তখন এই সতর্কতা দিলেন ক্লিফোর্ড। 

ব্রিটেন আন্তর্জাতিক এআই রেগুলেশনের কেন্দ্র হতে চায়। এই মহাপরিকল্পনায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে সম্মত করাতে ঋষি সুনাক যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছেন।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী চান আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) মতো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা তদারকির জন্য একটি পর্যবেক্ষক সংস্থাকে স্বাগত জানাতে।

একই সঙ্গে নতুন একটি আন্তর্জাতিক গবেষণা সংস্থার প্রস্তাবও দেবেন। এ খবর দিয়েছে লন্ডনের অনলাইন দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট। এতে বলা হয়, ১০ ডাউনিং স্ট্রিটের ওই উপদেষ্টা বলেছেন, বৈশ্বিক মাত্রার ভিত্তিতে যদি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে নিয়ন্ত্রণ করা না হয়, তাহলে এই সিস্টেম অত্যন্ত শক্তিশালী হয়ে উঠবে, যা নিয়ন্ত্রণ করতে মানবজাতিকে সংগ্রাম করতে হবে।

সম্প্রতি কয়েক ডজন শীর্ষ বিশেষজ্ঞ এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অনেক প্রবক্তা সতর্ক করেছেন। তারা বলেছেন, মহামারী অথবা পারমাণবিক যুদ্ধের মতোই গুরুত্ব দিয়ে প্রযুক্তি খাতের ঝুঁকির বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে। তারা এ বিষয়ে চিঠিও লিখেছেন। এরপর ম্যাট ক্লিফোর্ড ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীকে ওই সতর্কতা দিয়েছেন।

এমনকি জিওফ্রে হিন্টন, যাকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা তৈরির ‘গডফাদার’ বলা হয়, তিনিও ভয় পাচ্ছেন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার কারণে ভবিষ্যতে তৈরি হতে চলা পরিস্থিতি নিয়ে। তাই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অপকারিতা ও ঝুঁকি নিয়ে নির্দ্বিধায় কথা বলার জন্য গুগল থেকে পদত্যাগ করেছেন হিন্টন। তার মতে, কৃত্রিম মেধা বিশ্বকে এমন একটা জায়গায় নিয়ে যাচ্ছে, যেখানে কোনটা ‘সত্য’ আর কোনটা ‘মিথ্যা’ তা খুঁজে বের করা ধীরে ধীরে কঠিন হয়ে পড়বে।

শুধু তাই নয়, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে দুশ্চিন্তার কথা জানিয়েছেন ধনকুবের ওয়ারেন বাফেট। ওয়ারেন এর তুলনা টেনেছেন পরমাণু বোমার সঙ্গে!
তিনি জানিয়েছেন, বন্ধু বিল গেটসের বদৌলতে সম্প্রতি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অ্যাপ্লিকেশন চ্যাটজিপিটির সঙ্গে পরিচয় হয়েছে তার। কিন্তু তিনি তার পর থেকেই উদ্বিগ্ন। তার মধ্যে একটি ভয় কাজ করছে।

ওয়ারেন জানিয়েছেন, চ্যাটজিপিটি এত কিছু করতে পারে, তা জেনে যেমন তিনি অভিভূত, তেমনই তার মধ্যে একটি আশঙ্কাও তৈরি হয়েছে।  তিনি বলেন, “যখন কোনও একটা জিনিস সব করতে পারে, তখন আমার ভয় হয়। এক্ষেত্রেও হয়েছে। কারণ আমি জানি এই আবিষ্কারকে আমরা পিছনে নিয়ে যেতে পারব না। মুছে ফেলতে পারব না।” 

সূত্র: স্কাই নিউজদ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউকে

About The Author

Related posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: কপি থেকে বিরত থাকুন,ধন্যবাদ।