সালেক সুফী,সিনিয়র ক্রীড়া বিশ্লেষক ও আন্তর্জাতিক জ্বালানী পরামর্শক
পুনের মহারাষ্ট্র ক্রিকেট এসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে কাল নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধে ১৬০ রানের বিশাল জয় পেয়েছে টুর্নামেন্টে জয় খরায় ধুঁকতে থাকা ইংল্যান্ড। ৮ ম্যাচে দ্বিতীয় জয় পেয়ে ওদের অবস্থান ১০ম থেকে ৭ম উত্তীর্ণ হয়ে আপাতত স্বস্তি। টস জয়ী হয়ে কাল ব্যাটিং করে ৩৩৯/৯ বড় স্কোর গড়েছিল।
দীর্ঘ ক্লান্তিকর টুর্নামেন্টে নিজেদের মোমেন্টাম ধরে রেখে এই রান তাড়া করা ডাচের সামর্থে ছিল না. ইংলিশ স্পিনার্সদের ভালো বোলিং মোকাবেলায় ৩৭.২ ওভারে ১৭৯ রানে গুটিয়ে যায় নেদারল্যান্ডস। ১৬০ রানের বিশাল জয়ে রান রেট উন্নীত হওয়ায় ইংল্যান্ড উঠে আসে ৭ম পসিশনে। এভাবে শেষ হলে ইংল্যান্ড খেলবে ২০২৫ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি।
একসময় বিশ্ব ছড়ানো ইংরেজ সাম্রাজ্যে সূর্য অস্ত যেত না. কালের বিবর্তনে ইংল্যান্ড এখন সীমিত সংকুচিত। ব্রিটিশ রাজ্ ওদের উপনিবেশ গুলো ধীরে ধীরে ছেড়ে গেলেও রেখে গিয়েছে ক্রিকেট। সদা বলের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের দুই ফরম্যাটে শিরোপাধারী ইংল্যান্ড ক্রিকেট সাম্রাজ্যের এবারের পতন ঘটেছে ইতিমধ্যে। যে দলটিকে এবারের বিশ্বকাপ জয়ের জন্য অন্যতম শীর্ষ প্রতিদ্বন্দ্বী ধরা হয়েছিল ৭ ম্যাচ শেষে ওদের অবস্থান ছিল সবার তলানিতে। কাল নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধে বিশাল জয়ে ওদের উত্তরণ ঘটেছে ৭ নম্বর পসিশনে। শেষ খেলা শেষ চারে উন্নীত হতে প্রত্যাশী পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। উপমহাদেশের ৫ অংশগ্রহণকারী দেশ গুলোর মধ্যে ভারত ,আফগানিস্তান এবং শ্রীলংকার সাথে হেরেছে ওরা। একমাত্র জয় বাংলাদেশের বিরুদ্ধে। তবু মনে হচ্ছে উৎরে যাবে ইংল্যান্ড। খেলতে পারবে ২০২৫ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি।
নেদারল্যান্ডস দল বা দলের খেলোয়াড়রা ইংল্যান্ডের কাছে অপরিচিত নয়। অনেকেই খেলে ইংল্যান্ডে। ক্রিকেট অনেকটা একই ঘরনার। তবে নেদারল্যাডস স্বল্প সময়ের ব্যাবধানে এতগুলো উঁচু মানের দলের বিরুদ্ধে খেলেনি। তাই আগ্রাসী ইংল্যান্ড দলকে স্বল্প রানের পুঁজিতে বেঁধে রাখা সম্ভব হয় নি ওদের। তদুপরি কাল বিশ্বমানের বেন স্টোকস ছিল আপন ছন্দে। স্টোকসের ৮৪ বলে করা ১০৮ রান এবং ডেভিড মালানের ৮৭ ইংল্যান্ডের বড় স্কোর গড়ার ভিত্তী দিয়েছিলো। শেষদিকে চৌকষ খেলোয়াড় ক্রিস ওকস ৫১ রানের কার্যকরী ইনিংস খেলেছে। কালও জন্য বেয়ারস্ট এবং জোস্ বাটলার আবারো ব্যাট হাতে ব্যার্থ হয়েছে। তবুও স্বস্তি ইংল্যান্ডের ৩৩৯/৯ করতে পারায়।
রান তাড়া করে নিয়মিত উইকেট হারিয়েছে ডাচ বাহিনী। তেজা নিদামানুম (৪১*) , স্কট এডওয়ার্ডস (৩৮) , ওয়েসলি বারেসি ( ৩৭) ,সাইব্র্যান্ড এনজেলব্রেখট ( ৩৩) ভালো সূচনা করেও ইনিংস গুলো বড় করতে পারে নি. কাল দুই ইংলিশ স্পিনার মঈন আলী ( ৩/৪২) এবং আদিল রাশিদ ( ৩/৫৪ ) ভালো বোলিং করেছে। ডাচ প্রতিরোধ ১৭৯ রানে থামিয়ে ১৬০ রানের বিশাল জয় পেয়েছে ইংল্যান্ড। ফলশ্রুতিতে ১০ম স্থান থেকে ৭ম স্থানে উত্তরণ। সেমী ফাইনাল খেলার আশা পিনাক আগেই তিরোহিত। দেরিতে হলেও এই জয় অন্তত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলার সম্ভাবনা সৃষ্টি করলো। অবশেষে বিশ্ব ক্রিকেট দেখলো ইংরেজ সিংহের গর্জন। কিন্তু বড্ডো দেরি হয়ে গাছে। ফ্লাইট মিস করেছে ইংল্যান্ড।