শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪

সদ্যপ্রাপ্ত সংবাদ
বিরামপুরে সরিষার বাম্পার ফলন, কৃষকের মুখে হাসি
বিরামপুরে সরিষার বাম্পার ফলন, কৃষকের মুখে হাসি

বিরামপুরে সরিষার বাম্পার ফলন, কৃষকের মুখে হাসি

বিরামপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ

মৌ মৌ গন্ধ, ভ্রমর ছুটছে মধু আহরণে, মাঠে মাঠে সরিষার ক্ষেতগুলো যেন সেজেছে প্রকৃতির হলুদ কন্যায়, দিগন্ত জুড়ে হলুদের বাহার, বাতাসে দোল খাচ্ছে সরিষার ফুলগুলো এ দৃশ্য সকলেকেই আকৃষ্ট করছে।

উত্তরের জনপদ দিনাজপুরের বিরামপুরে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে সরিষার আবাদ বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। বাজারে তেলের দাম বেশী হওয়ায় এবার সরিষা চাষে ঝুকেছে কৃষক, কৃষিতে খরচ বেড়েছে তাই অল্প জমিতে বেশী ফসল ফলন করার আশায় রোপা আমণ কাটাঁর পরেই জমি ফেলে না রেখে সরিষা চাষে প্রস্তুত করে কৃষকরা।

স্বল্প খরচ আর কম সময়ে সরিষা চাষে বেশী লাভ। প্রতি বিঘা জমিতে সরিষার গড়ে ৫ থেকে ৬ মণ হয় । যা ৫/৬ জনের একটি পরিবারের সারা বছরের তেলের চাহিদা পুরণ করতে পারে। এর মেডিসিনাল ভেল্যুও আছে। সরিষার শিকড়ে নডিউল থাকে যা জমিতে নাইট্রোজেন যোগ করে। জৈব সার হিসেবে ও সরিষা গাছ অনেক গুরুত্ব বহন করে। সরিষার খৈল পুকুরে এবং জমিতে ও গবাদিপশুর খাবার হিসেবে খুব গুরুত্বপূর্ণ। উন্নত জাতের সরিষা চাষ করে লাভবান হচ্ছেন চাষিরা। ফলে অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর বেড়েছে সরিষা চাষ। প্রচলিত দেশি সরিষার চেয়ে ফলন বেশি হওয়ায় বারি-১৪, বারি-১৫, বারি ১৭ ও বারি ১৮ জাতের সরিষা চাষে আগ্রহী হচ্ছে। এরপর আবার বোরো ধান রোপণ করবেন তারা। ফলে একই জমিতে বছরে তিনবার ফসল উৎপাদন হচ্ছে।

সরেজমিনে বিভিন্ন মাঠে গিয়ে দেখা যায়, সরিষা গাছে ফুল এসেছে অনেক গাছে ফলও এসেছে সরিষা চাষিরা জানান, এবার প্রতি বিঘা জমি থেকে ৬-৭ মণ সরিষা উৎপাদনের আশা করছেন তারা। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসেব মতে চলতি বছরে সরিষার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১ হাজার ৩৯০ হেক্টর । সেখানে চাষ হয়েছে ১ হাজার ৫৩০ হেক্টর। উপজেলার মুকুন্দপুর ইউনিয়নের কৃষক সমির, মজিবর, সামছুল, হামিদ, হামিদুলসহ অনেকে বলেন, গত বছরের চেয়ে এবার দ্বি-গুন জমিতে সরিষার আবাদ করেছে ।

কৃষক হামিদুল ইসলাম বলেন সরকারি প্রণোদনার বীজ পেয়ে বারি ১৪ জাতের সরিষা চাষ করেছেন আশা করছেন ফলন ভাল হবে। অন্যান্য কৃষক জানান, প্রতিবিঘা জমিতে সরিষা চাষে খরচ হয় সর্বোচ্চ সাড়ে তিন হাজার থেকে ৪ হাজার টাকা। প্রতি মণ সরিষা বিক্রি করা যায় ৩ হাজার থেকে ৩ হাজার ৫০০ টাকা দরে। প্রতি বিঘাতে গড়ে ৬/৭ মণ সরিষা উৎপাদন হলে বিঘা প্রতি ১৫-১৬ হাজার টাকা লাভ করা যায়। কম সময়ে কমে খরচে বেশী লাভ হয়, সরিষা তোলার পরে বোরর আবাদ হয়। চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় বারি-১৪, ১৫, ১৭ ও ১৮ জাতের সরিষা চাষ হয়েছে।

উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ নিকছন চন্দ্র পাল বলেন, স্বল্প খরচে, কম সময়ে লাভজনক ফসল এটি। সরকারের কৃষিতে সু-দৃষ্টি রয়েছে, উপজেলায় সরকারী ভাবে প্রণোদনা দেয়া হয়েছে ৩ হাজার কৃষককে । ভাল বীজ এর পর্যাপ্ততা এবং প্রণোদনা প্রদান ও আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় সরিষা আবাদ বেড়েছে। প্রতি বছর প্রচুর পরিমাণ ভোজ্যতেল আমদানি করতে হয়। সরিষা আবাদের ফলে তেলের চাহিদা পুরনের পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে। উপজেলা কৃষি অফিসের কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক কৃষকদের সহায়তা দিতে প্রস্তুত।

About The Author

Related posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: কপি থেকে বিরত থাকুন,ধন্যবাদ।