নতুন সূর্য ডেস্কঃ
বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ জ্বালানি তেল উত্তোলন ও রপ্তানিকারী দেশ সৌদি আরব তার এশীয় ক্রেতাদের কাছে কম দামে তেল বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। চলতি বছর জুন মাস থেকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হবে বলে শুক্রবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে সৌদির তেল উত্তোলন ও বিপননকারী রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি আরামকো।
দাম কী পরিমাণ কমানো হতে পারে— মার্কিন সংবাদামধ্যম ব্লুমবার্গের এই প্রশ্নের উত্তরে আরামকোর এক জেষ্ঠ্য কর্মকর্তার জানান, আগামী জুন মাস থেকে এশীয় ক্রেতাদের কাছে প্রতি ব্যারেল তেলের বিক্রয়মূল্য ২ দশমিক ৫৫ ডলার হ্রাসের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির সরকার।
তবে এই সুবিধা ভোগ করবে কেবল এশিয়ার ক্রেতারা। ইউরোপ-যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেতাদের ওপর মূল্যছাড়ের এই সুবিধা প্রযোজ্য হবে না বলে জানিয়েছেন ওই কর্মকর্তা।
সৌদি আরব বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম জ্বালানি তেল উত্তোলন ও রপ্তানিকারী দেশ। সেই সঙ্গে জ্বালানি তেলের বাজারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাবক অর্গানাইজেশন অব পেট্রোলিয়াম এক্সপোর্টিং কান্ট্রিজ প্লাসেরও (ওপেক প্লাস) নেতৃস্থানীয় সদস্য মধ্যপ্রাচ্যের উপসাগরীয় অঞ্চলের সবচেয়ে বড় এই দেশটি।
১৫৯ লিটার পরিমাণ তরল বস্তুকে এক ব্যারেল হিসেবে ধরা হয়। সৌদির বিভিন্ন খনিতে মজুত অপরিশোধিত তেলের পরিমাণ ২৬ হাজার ৭০০ কোটি ব্যারেল।
আন্তর্জাতিক সৌদির জ্বালানি তেল আরব লাইট গ্রেড নামে পরিচিত। বিশ্ববাজারে প্রতিদিন যে পরিমাণ তেল বিক্রি করে সৌদি আরব, তার ৬০ শতাংশের ক্রেতা এশিয়ার বিভিন্ন দেশ। চীন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া এবং ভারত সৌদি তেলে সবচেয়ে বড় কয়েকটি ক্রেতাদেশ।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর পর রাশিয়ার ওপর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে রুশ তেলের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র ও তার ইউরোপীয় মিত্ররা। সেই সঙ্গে আন্তর্জাতিক বাজারে রুশ তেলের দামও নির্ধারণ করে দেওয়া হয়।
এদিকে তেলের বাজার প্রায় সম্পূর্ণ ডলারনির্ভর হওয়ায় এবং বাজারে রুশ তেলের সরবরাহ কমে যাওয়ায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ডলারের মজুত বাঁচাতে তেল কেনা কমিয়ে দেয়। ফলে বৈশ্বিক তেলের বাজারে মন্দাভাব শুরু হয়।
এই পরিস্থিতিতে তেল রপ্তানি থেকে নিজেদের মুনাফা নিশ্চিত রাখতে চলতি মাসের শুরুর দিকে খনি থেকে তেলের দৈনিক উত্তোলন হ্রাস করে সৌদিসহ ওপেক প্লাসের ৮ দেশ। আরামকোর তথ্য অনুযায়ী, ১ মে থেকে দৈনিক উত্তোলন ৫ লাখ ব্যারেল হ্রাস করেছে সৌদি আরব।