নিউজ ডেস্কঃ করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব রোধে সামাজিক দূরত্ব শিশুদের মাঝে শিক্ষণীয় করে তুলতে চীনের পূর্বে হ্যাংজহো শহরের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ঐতিহাসিক টুপি ব্যবহার করতে দেখা গেছে।চীনের স্কুলে সামাজিক দূরত্ব মানতে শিশুরা ব্যবহার করছে ঐতিহাসিক টুপি।
জানা যায়, স্কুল কর্তৃপক্ষ এমন একটা নোটিশ আগেই দিয়েছিল। শিক্ষার্থীরা নিজেরাই এ ধরনের টুপি তৈরি ও সংগ্রহ করেছে। জনশ্রুতিতে চলমান একটি মতামত উল্লেখ করে হংকং সিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসবিদ সোসাই লিক হ্যাংয় বলেন, চীন শাসনকারী প্রথম সম্রাটরা খুব গানের ভক্ত ছিলেন। তার মন্ত্রী ও সভাসদরা যেন গানের আসর চলার সময় নিজেদের মধ্য ফিশফিশিয়ে কোনও কথা বলতে না পারে, দূরত্ব নিশ্চিত করতে এ ধরনের টুপি ব্যবহার করা হতো। তবে সোসাই লিক হ্যাংয় এটাও বলেন, গান ভক্ত সম্রাটরাও এ ধরনের টুপি ব্যবহার করতেন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়া রোধ করতে সবাইকে সবার থেকে এক মিটার দূরত্বে অবস্থান বজায় রাখার পরামর্শ দিয়েছে। যদি এই নির্দেশনা না মেনে চলা হয়, তবে কোভিড–১৯ সংক্রমিত ব্যক্তির হাঁচি কাঁশির মাধ্যমে সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কার প্রকাশ করা হয়।চীনের একজন শিশুশিক্ষা বিশেষজ্ঞ শিশুদের মাঝে সামাজিক দূরত্বটি ভালোভাবে বোঝানোর জন্য এই ঐতিহাসিক টুপি ব্যবহারের পরামর্শ দেন। এতে শিক্ষার্থীদের মাঝে সামাজিক দূরত্ব পালন করতে দেখা যায়।
হংকং এর শিক্ষা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিশুশিক্ষা বিভাগের সহযোগী প্রধান আয়ান ল্যাম চুন বান বলেছেন, শিশুরা যখন এই টুপি নিজেরা ব্যবহার করে, তখন ভুলবশত এই টুপির ডানাতে নিজেরা স্পর্শ করে বা একে অপরের ডানার সাথে লেগে যায়, তখন তারা সামাজিক দূরত্বের বিষয়ে সচেতন হয় এবং তাদের নিজেদের দূরত্ব বজায় করতে দেখা গেছে। ল্যাম এই ডানাগুলির সাথে প্রযুক্তির সংমিশ্রণের পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি বলেন, এই ডানাগুলিতে সাউন্ড সিস্টেম ব্যবহার করা যেতে পারে। যাতে একজনের ডানার সাথে আরেকজনের ডানা স্পর্শ করলে একটা অ্যালার্ম দেয় এবং নিজেরা আরো সতর্ক হতে পারে। তিনি এ টুপিটির আরো আধুনিকায়ন করার পক্ষে মতামত দিয়েছেন।
মূলত ৯৬০ থেকে ১২৭৯ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত চীন শাসনকারী সিং রাজবংশের কর্মকর্তারা এ ধরনের টুপি ব্যবহার করতেন। দীর্ঘদিন লকডাউন থেকে মুক্ত হয়ে বিদ্যালয়ে ফিরে এক মিটার দূরত্ব নিশ্চিত করতে এ টুপি ব্যবহার করতে দেখা গেছে শিক্ষার্থীদের।