এ টি এম মাহফুজ,যবিপ্রবি প্রতিনিধিঃ
শিক্ষকদের পদোন্নতি, সুযোগ-সুবিধা ও বিভিন্ন প্রকার দাবিদাওয়াসহ ছয় দফা দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (যবিপ্রবি) শিক্ষক সমিতি। আজ মঙ্গলবার সকাল ১০ টায় যবিপ্রবির প্রশাসনিক ভবনের সামনে সমিতির পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসাবে এ অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ।
কর্মসূচিতে জানানো হয়, গত ১৯ এপ্রিল ২০১৪ তারিখে অনুষ্ঠিত রিজেন্ট বোর্ডের ২৩ তম সভার ২৯ তম সিদ্ধান্ত মোতাবেক প্রাপ্যতার তারিখ (ডিউ ডেট) হতে আর্থিক সুবিধাসহ প্রভাষক হাতে সহকারী অধ্যাপক পদে বঞ্চিত সকল শিক্ষককে পদোন্নতি প্রদান করার রদাবি জানানো হয়। আসন্ন রিজেন্ট বোর্ডে প্রাপ্যতার তারিখ (ডিউ ডেট) হতে আর্থিক সুবিধাসহ সহযোগী অধ্যাপক ও অধ্যাপক পদে সকল শিক্ষককে পদোন্নতি এবং যেকোনো সময় ধারাবাহিকভাবে/অধারাবাহিকভাবে স্নাতকোত্তর, পিএইচডি ও পোষ্টডক্টরালের জন্য স্ববেতনে শিক্ষা ছুটির ব্যবস্থা কার্যকর করার দাবিও জানানো হয়।
এছাড়াও শিক্ষকদের শিক্ষা ছুটি/পদের বিপরীতে কর্মরত শিক্ষকদের শ্রান্তি বিনোদন ছুটি ও ভাতা প্রদান ও চাকুরীর দ্বিতীয় বছর পূর্ণ হওয়ার পরের দিন থেকে জোষ্ঠ্যতার ভিত্তিতে স্থায়ী পদে স্থানান্তর করারও দাবি জানানো হয়। প্রথম বর্ষ থেকে নন ডিপার্টমেন্টাল সকল কোর্সের জন্য সংশ্লিষ্ট শিক্ষককে সম্মানী/পারিতােষিক/আনুতোষিকের ব্যবস্থা, সকল শিক্ষকদের জন্য ল্যাপটপ/ডেস্কটপ, ডিজিটাল ডিভাইসসহ প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির ব্যবস্থা করা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষকদের নিয়োগ বা পদোন্নতির নিয়োগপত্রে চাকুরী নিশ্চিতকরণের জন্য নীতিমালা বহির্ভূত গবেষণাপত্র প্রকাশের শর্ত বাতিল করার জোর দাবি জানানো হয়। এছাড়াও রিজেন্ট বোর্ডে ইঞ্জিনিয়ারিং স্নাতকোত্তর (সান্ধ্যকালীন নয়) ডিগ্রী গ্রহণের অনুমোদনের দাবি জানানো হয়।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আনোয়ার হোসেন বলেন, “শিক্ষকদের দাবির প্রেক্ষিতে ১৯/০৪/২০১৪ তারিখে অনুষ্ঠিত রিজেন্ট বোর্ডের ২৩তম সভার ২৯ তম সিদ্ধান্ত মোতাবেক প্রাপ্যতার তারিখ হতে আর্থিক সুবিধাসমূহ থেকে বঞ্চিত শিক্ষকদের পদোন্নতি এবং কার্যকারিতার বিষয়টা আসন্ন রিজেন্ট বোর্ডে উপস্থাপন করা হবে। সর্বশেষ রিজেন্ট বোর্ডে মাস্টার্স, পিএইচডি ও পোস্টডক্টরালের জন্য স্ববেতনে পূর্ণকালীন শিক্ষা ছুটির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শিক্ষকেরা তাদের ডিগ্রী শেষ করেই পুনরায় জয়েন করতে পারবে। সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরপরই দুজন শিক্ষককে এই শিক্ষা ছুটি দেওয়া হয়েছে।”
তিনি আরো বলেন, “শিক্ষকদের প্রাপ্তি বিনোদন ছুটি ও ভাতা এবং স্থায়ীপদে চাকুরী স্থানান্তরের বিষয়টা দেশের রাষ্ট্রীয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী সকলের সিদ্ধান্ত মোতাবেক হবে। গত বছরই প্রতিটা ডিপার্টমেন্টে শিক্ষকদের জন্য ল্যাপটপ/ ডেস্কটপ, ডিজিটাল ডিভাইসসহ প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি দিয়ে দেওয়া হয়েছে।
অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষকদের পদোন্নতির নিয়োগপত্রে চাকুরী নিশ্চিতকরণের জন্য নীতিমালা বহির্ভূত কোন গবেষণাপত্র প্রকাশের শর্ত দেওয়া নাই, সবকিছুই নিয়ম অনুযায়ী ই হচ্ছে। গত বছরে দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয়কে পেছনে ফেলে গবেষণাপত্র প্রকাশের সংখ্যার দিক দিয়ে আমরা অনেক এগিয়ে গেছি। ইঞ্জিনিয়ারিং মাস্টার্স (সান্ধ্যকালীন নয়) ডিগ্রী গ্রহণের অনুমোদন রিজেন্ট বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ই কার্যকর হবে।”
এছাড়াও গত ২৪ নভেম্বর অনুষ্টিত “শেখ রাসেল জিমনেসিয়াম” উদ্বোধন অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রীর উপস্থিতিতে উপাচার্য কর্তৃক যবিপ্রবি উচ্চমানের গবেষকদের সংখ্যা নিয়ে ব্যিভান্তিকর তথ্য প্রদান ও শিক্ষকদেও দাবিদাওয়া না মানায় ১৪ তম যবিপ্রবি দিবস বর্জন করার সিদ্ধান্ত দেয় শিক্ষক সমিতি। শিক্ষক কার্যনির্বাহী কমিটির দ্বিতীয় সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত গত ২৪ জানুয়ারী সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ড. এস. এম. নুর আলম ও সাধারণ সম্পাদক মো. আমজাদ হোসেন, ড. ইঞ্জি স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে অনুষ্ঠান বর্জনের সিদ্ধান্ত জানানো হয়। যার ফলশ্রুতিতে গতকাল ২৫ জানুয়ারী অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দের দেখা মেলেনি।
অবস্থান কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন যবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি সভাপতি ড. মোহাম্মদ তোফায়েল আহমেদ, সহ সভাপতি সহযোগী অধ্যাপক ড. এস. এম. নুর আলম, সাধারণ সম্পাদক মো. আমজাদ হোসেন, ড. ইঞ্জি, সহ-সাধারণ সম্পাদক সহকারী অধ্যাপক ড. মো. আব্দুর রউফ সরকার, কোষাধ্যক্ষ সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. শাহেদুর রহমান, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক সহকারী অধ্যাপক মোঃ মেহেদী হাসান, কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য- সহকারী অধ্যাপক কিশোর কুমার সরকার, সহকারী অধ্যাপক ড. মোঃ ফরহাদ বুলবুল, সহকারী অধ্যাপক মোঃ সুমন রহমান এবং পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মোঃ হুময়ুন কবির প্রমুখ।