বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪

সদ্যপ্রাপ্ত সংবাদ
কলারোয়ায় ১০ হাজার পরিবার “একটি বাড়ী একটি খামার” প্রকল্প থেকে ঋণ নিয়ে স্বাবলম্বী
কলারোয়ায় ১০ হাজার পরিবার “একটি বাড়ী একটি খামার” প্রকল্প থেকে ঋণ নিয়ে স্বাবলম্বী

কলারোয়ায় ১০ হাজার পরিবার “একটি বাড়ী একটি খামার” প্রকল্প থেকে ঋণ নিয়ে স্বাবলম্বী

স্টাফ রিপোর্টারঃ

২০০৯ সালে কলারোয়ায় একটি বাড়ী একটি খামার প্রকল্প নামে সরকারি ভাবে একটি ঋণ সংস্থা স্থাপিত হয়। বর্তমানে সংস্থারটি পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক নামে পরিচিত লাভ করেছে। এই প্রকল্পটি সরকার পরিচালনা করেন। যার সভাপতি হলেন-উপজেলা নির্বাহী অফিসার জুবায়ের হোসেন চৌধুরী। সদস্য সচিব হলেন- একটি বাড়ী একটি খামারের উপজেলা সমন্বয়কারী বদরুল আলম ।

জানা গেছে, কলারোয়ায় একটি বাড়ী একটি খামার প্রকল্পে ১৯হাজার ৩শ ৯২জন সদস্য রয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে-একটি পৌরসভাসহ উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন। এই সদস্যদের নিয়ে ৩শ ৭৩টি গ্রাম উন্নয়ন সমিতি গঠন করা হয়েছে। এই সমিতির মাধ্যমে সদস্যদের স্বাবলম্বী করার জন্য ঋণ দেয়া হয়। সদস্যদের নিয়ে মাসে মাসে উঠান বৈঠকের মাধ্যমে স্বাবলম্বী করার জন্য পরামর্শ প্রদান করা হয়। প্রতিটি সদস্য এই ঋণ নিয়ে বাড়ীতে হাস, মুরগী, গরু, ছাগল, সেলায় মেশিন ও দোকানদারী করে লাভবান হচ্ছে । সাথে তাদের ছেলে ও মেয়েদের উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলছে। কাচা ঘর থেকে পাকা বাড়ী নির্মাণ করেছে। অনেক সদস্যদের ছেলে ও মেয়ে এখন চাকুরি করেন। বর্তমানে এই প্রতিষ্ঠানটি এলাকার অসহায় মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের এক মাত্র ভরসা হিসাবে পার্শে¦ দাড়িয়েছে। যার কারনে আজ উপজেলায় ১০ হাজার পরিবার স্বাবলম্বী হয়েছে।

শুরু থেকে এ পর্যন্ত এই প্রতিষ্ঠানটি কলারোয়া পৌরসভাসহ উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের প্রায় ৮০ কোটি টাকার ঋণ প্রদান করেছে।

একজন উপকারভোগী আলমগীর হোসেন ও রহিমা খাতুন বলেন, একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের আওতায় ২০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে একটি গরু কিনি। সেই গরু লালন-পালন করে আমি এখন স্বাবলম্বী। আমার এখন চারটি গরু ছাড়াও খেত খামার রয়েছে। মালিক হয়েছি একটি বাড়িরও। এই উপজেলায় সাফল্যের মুখ দেখছে একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের। এই প্রকল্পের আওতায় উপজেলার ১২ ইউনিয়নের ১৯হাজার ৩শ ৯২টি পরিবার আত্মনির্ভরশীল হয়েছে।

একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের মাধ্যমে দারিদ্রতাকে জয় করা গেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। যার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় দরিদ্র মানুষের স্বপ্ন পূরণ হয়েছে তিনি হচ্ছেন কলারোয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার জুবায়ের হোসেন চৌধুরী। তার সার্বিক সহযোগিতায় প্রকল্পটি সাফল্যের মুখ দেখেছে। এ প্রকল্পের কার্যক্রম সন্তোষজনক হওয়ায় কলারোয়া উপজেলাকে মডেল উপজেলার ঘোষণার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি পরিবার অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছে।

আরিজুল ইসলাম নামে এক সদস্য জানান, এখানে থেকে ঋণ নিলে বেশি সুদ দিতে হয় না। সপ্তাহ, মাসে বা বছরে এককালীন ঋণ পরিশোধের সুবিধা থাকায় আমরা উপকার পেয়েছি। কেঁড়াগাছির রহিমা খাতুন জানান, একটি বাড়ি একটি খামার থেকে তিনি যে উপকার পেয়েছেন তা বলার মত নয়। ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে গেলে বিভিন্ন কাগজপত্র, সুদ, ঘুষ দিতে হয়। আর সেখান থেকে তিনি সহজ শর্তে দুফায় ৪৫ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে একটি গরু কিনেছেন। বর্তমানে গরুটির মূল্য ৮০ হাজার টাকা। এ প্রকল্পটি আরও ৫ বছর আগে যদি সরকার করতো তাহলে আমরা আরও বেশি উপকৃত হতাম।

প্রকল্পের উপজেলা সমন্বয়কারী বদরুল আলম জানান, ইউএনও’র সার্বিক সহযোগিতায় মাঠ সহকারী, সুপারভাইজার ও একজন সমন্বকারীর অকান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে প্রকল্পটিতে সাফল্য এসেছে। তিনি আরও জানান, দরিদ্রদের সমিতির প্রকল্প আওতাভুক্ত করে তাদের দারিদ্রমুক্ত করা হবে। এছাড়া প্রকল্পটির স্থায়ী রুপদানে সরকার পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক নামে একটি বিশেষায়িত ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেছে। যে ব্যাংকের মাধ্যমে দেশের সব দরিদ্র জনগণকেই দরিদ্রতা মুক্তিতে কাজ করবে।

ইউএনও জুবায়ের হোসেন চৌধুরী বলেন, সঠিক প্রকল্প গ্রহণ, অকান্ত প্রচেষ্টা, সঠিক উপকারভোগী নির্বাচন, আর্থিক শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার কারণে তেমন কোনও অনিয়ন ও দুর্নীতি না থাকায় প্রকল্পটি ভালো করেছে। এছাড়া যে ব্যক্তি যে কাজে উপযোগী তাদের সেই ধরনের কাজ দেওয়া এবং উৎসাহ দেওয়াসহ আয়বর্ধন কাজে নিয়োগ করার মাধ্যমে প্রকল্প সফলতার মুখ দেখেছে।

About The Author

Related posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: কপি থেকে বিরত থাকুন,ধন্যবাদ।