আহসান উল্লাহ খোরদো কলারোয়ার প্রতিনিধি
যে হস্তশিল্পে ফুটে উঠছে আবহমান বাংলার ঐতিহ্য, সেই
শিল্পে ভর করে বদলে যাচ্ছে গ্রামীণ অর্থনীতি। খেজুর গাছের পাতা আর কাশ
বনের খড় দিয়ে দারিদ্র্যকে বেঁধে সাবলম্বী হচ্ছেন সুবিধা বঞ্চিত নারীরা।
যাদের কারুকাজে ফ্যাশনে যোগ হচ্ছে নতুন মাত্রা। গ্রামীণ নারীর ক্ষমতায়নে
বড় ভূমিকা রাখবে এই হস্তশিল্প। আর এই হস্তশিল্পে সাতক্ষীরার কলারোয়া
উপজেলায় দরিদ্র মধ্যবিত্ত পরিবারের নারীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি
এবং স্বাবলম্বী করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে নিবেদিত রয়েছেন সাধারণ পরিবারের
সন্তান শিহাব উদ্দীন পলাশ ও রিপন মন্ডল নামের দুই যুবক। এর পাশাপাশি
নিজের ডিজাইনে তৈরী করা হস্তশিল্পগুলো বাজারজাত করে তারা দুইজনও
আত্ননির্ভর হয়ে উঠেছেন। শিহাব উদ্দীন পলাশ উপজেলার যুগিখালী ইউনিয়নের
পাঁচনল গ্রামে বসবাস করেন। তিনি ঋশিল্প নামের এক এনজিও সংস্থার
প্রতিবন্ধী স্কুলে চাকুরি করতেন। এর ফাঁকে ফাঁকে তিনি হস্তশিল্পেরও কাজ
করতেন। এর পরে তিনি ওই চাকুরি ছেড়ে দিয়ে এলাকার দরিদ্র নারীদের এ কাজে
প্রশিক্ষণ দিয়ে আত্মনির্ভর করার কাজেও মনোনিবেশ করেন তোলেন। এছাড়া
প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত নারীদের নির্ধারিত মজুরী দিয়ে তার নকশা করা অত্যন্ত
সুন্দর, দৃষ্টিনন্দন এবং আকর্ষণীয় সব হস্তশিল্প তৈরী করে তা বাজারজাত
করেন। বর্তমানে উৎপাদিত সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে-সুদৃশ্য কারুকাজময় নকশা করা
লন্ড্রী বাসকেট, প্লেস ম্যাট, রেক্টেংগুলার বাসকেট, কিচেন বাসকেট,
সিলিন্ডার বাসকেট অন্যতম। তারা ক্রেতাদের পছন্দের চাহিদা মাফিক পণ্যও
বাংলাদেশ থেকে ইউরোপসহ ১০/১২টি দেশে বিক্রয় করতে সক্ষম হয়েছেন। কপোতাক্ষ
হ্যান্ডিক্রাফটস এর প্রোপাইটার শিহাব উদ্দীন পলাশ জানান-গ্রামীণ নারীদের
প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদের দীর্ঘ ৭/৮ বছর ধরে একাজে লাগালো হয়েছে। উপজেলার
১২টি ইউনিয়নে ৩০ নারীকে হস্তশিল্পে প্রশিক্ষণ দিয়ে এ কাজে লাগানো হয়েছে।
ওই নারীরা তাদের বাড়ীর সকল কাজকর্ম শেষে অবসর টাইমে হস্তশিল্প কাজ করে
প্রতিমাসে ৩/৪ হাজার টাকা করে আয় করছেন। উপজেলার মধ্যে জয়নগর,
ক্ষেত্রপাড়া, কামারআলী, খোরদো, জালালাবাদ, কুশোডাঙ্গা, কাজিরহাট,
রঘুনাথপুর, সোনাবাড়ীয়া, খাসপুর ও বাকসা এলাকার নারীরা এই হস্তশিল্পের
নকশা তৈরী কাজে সহযোগিতা করছেন। মাস শেষ ওই নারীরা প্রাপ্য মজুরী নিয়ে
তাদের ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়ার ব্যয় নির্বাহ করছে। বাড়ীতে হাস-মুরগী,
গরু-ছাগল পালন করে তারা স্বাবলম্বী হচ্ছে।