রবিবার, ১৯ মে ২০২৪

সদ্যপ্রাপ্ত সংবাদ
বাবার কাছ থেকে ১০ টাকা নিয়ে বের হয়ে পৃথিবীতে আসার দিনই পৃথিবী ছাড়লো মাঈন উদ্দিন
বাবার কাছ থেকে ১০ টাকা নিয়ে বের হয়ে পৃথিবীতে আসার দিনই পৃথিবী ছাড়লো মাঈন উদ্দিন

বাবার কাছ থেকে ১০ টাকা নিয়ে বের হয়ে পৃথিবীতে আসার দিনই পৃথিবী ছাড়লো মাঈন উদ্দিন

নতুন সূর্য ডেস্কঃ

নটরডেম কলেজছাত্র নাঈম হাসানের মৃত্যুর রেশ না কাটতেই ঢাকার সড়কে দুই বাসের পাল্লায় আবারো প্রাণ ঝরলো আরো এক শিক্ষার্থীর। সোমবার রাতে রামপুরায় বাসচাপায় নিহত হয় একরামুন্নেসা স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী মাইনুদ্দীন ইসলাম দুর্জয়।

সোমবার ছিল দুর্জয়ের জন্মদিন। বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে, পৃথিবীতে আসার এই দিনই পৃথিবী ছাড়লো সদ্য এসএসসি পরীক্ষা শেষ করা ছেলেটি। আর তাই জন্মদিনে উৎসব উদযাপন নয়, ছেলের মরদেহ নিয়ে মাতম করতে হলো মাইনুদ্দীনের পরিবারকে। মৃত্যুর কিছু সময় আগেও বাবার সাথেই ছিলো চায়ের দোকানে। দুর্ঘটনাস্থল থেকে ৫ মিনিটের দূরত্ব পূর্ব রামপারায় বাসা মাইনুদ্দীনের

২০০২ সালের ২৯ নভেম্বর জন্ম হয় মাইনুদ্দিনের। এ বছর স্থানীয় একরামুন্নেসা স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছেন। তার বাবার নাম আব্দুর রহমান ভান্ডারি। তিনি পেশায় একজন চা দোকানি। পূর্ব রামপুরার মোল্লা বাড়ি এলাকায় চা বিক্রি করেন তিনি। পুলিশে চাকরির স্বপ্ন ছিল তার। তবে, একটি দুর্ঘটনাই শেষ করে দিল ছেলেকে নিয়ে নিম্নবিত্ত পরিবারটির সব স্বপ্ন। দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে মাইনুদ্দিন সবার ছোট। তাদের গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়।

রাজধানীর রামপুরায় অনাবিল পরিবহনের একটি বাসচাপায় মাঈন উদ্দিন মারা গেছেন। সোমরাত রাত পৌনে ১১টার দিকে রামপুরা বাজারের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

নিহতের বন্ধু মারুফ ইসলাম জানায়, বেপরোয়া গতির অনাবিল পরিবহনের বাসটি মাঈন উদ্দিনকে চাপা দেয়। তার চাচাতো ভাই মো. বাদশা কালের কণ্ঠকে বলেন, সে সন্ধ্যায় বাবার দোকানে চা বিক্রি করেছে। রাতে এক বন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিল। সেখান থেকে ফেরার পথে বাস তাকে চাপা দেয়। একজন পথচারী বাসায় ফোন দিয়ে এ খবর জানায়। তখনই আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে মাঈন উদ্দিনের লাশ দেখতে পাই।

পূর্ব রামপুরার মোল্লা বাড়ি এলাকায় নিহতের স্বজনদের আহাজারি। বাবা-মায়ের কান্নার শব্দের যেন আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে আছে। কেঁদে কেঁদে তার মা রাশেদা বেগম বলেন, ‘আমার ছেলেটাকে বড় করতে চেয়েছিলাম, পড়াশোনা করাতে ছেয়েছিলাম। কিন্তু একি সর্বনাশ হয়ে গেল আমার…! ছেলেটা জন্মদিনে মারা গেল…!

আহাজারি করে মাঈন উদ্দিনের বাবা আব্দুর রহমান বলছেন, বন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে যেতে আমার ছেলে ১০ টাকা চেয়েছিল। আমি ১০টাকা দিয়ে বলি দ্রুত বাসায় ফিরে এসো বাবা। কিন্তু আমার বাবা আর ফিরলো না।

একটি ভালো কলজে পড়ার ইচ্ছে ছিল মাঈন উদ্দিনের। তার বাবা বলেন, গতকাল দুপুরে একসঙ্গে ভাত খেয়েছিলাম আমরা। খাওয়ার সময় ছেলে বলছিলে, ‘পরীক্ষা ভালো হয়েছে। বাবা আমি ভালো কলেজে পড়তে চাই।’ তখন আমি তাকে আশ্বাস দিয়ে বলেছিলাম ভালো কলেজে পড়াবো। আমার সব দিয়ে হলেও পড়বো। কিন্তু আমার সব শেষ হয়ে গেল।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মতিঝিল বিভাগের রামপুরা থানার ওসি রফিকুল ইসলাম জানান, ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি অনেকগুলো বাসের আগুন দেওয়া হয়েছে। রাস্তা থেকে ছেলেটার লাশ উদ্ধার করি।

 

About The Author

Related posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: কপি থেকে বিরত থাকুন,ধন্যবাদ।