নতুন সূর্য ডেস্কঃ
ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে জাহাজে হামলার ঘটনায় মারা যাওয়া থার্ড ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মাদ হাদিসুর রহমানের মরদেহ ইউক্রেন বাংকার থেকে রোমানিয়া নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) দেশটির স্থানীয় সময় হাদিসুরের মরদেহটি মলদোভার উদ্দেশে রওনা হতে পারে। সেখান থেকে মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে রোমানিয়ায়।
বুধবার (৯ মার্চ) রাতে বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাখাওয়াত হোসাইন বলেন, হাদিসুর রহমানের মরদেহ রোমানিয়া পাঠানোর সব অফিসিয়াল প্রক্রিয়া শেষ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে মরদেহ বাহী কফিনটি রোমানিয়ার উদ্দেশ্য যাত্রা করবে। মরদেহটি মালদোভা হয়ে রোমানিয়ার বুখারেষ্ট নিয়ে যাওয়া হবে।
রোমানিয়ায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. দাউদ আলী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, সব কিছু ঠিক থাকলে মৃত নাবিক হাদিসুর রহমানের মরদেহ ইউক্রেন থেকে আগামীকাল মলদোভায় নিয়ে যাওয়া হবে। সেখান থেকে মরদেহ নেওয়া হবে রোমানিয়ায়। পরে সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে মরদের দেশে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হবে।
ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে রকেট হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত এমভি বাংলার সমৃদ্ধির ২৮ নাবিক বুধবার দুপুর ১২টার দিকে দেশে ফিরেছেন। তারা ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পূর্ব ইউরোপ উইংয়ের মহাপরিচালক সিকদার বদিরুজ্জামান এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, হাদিসুর রহমানের মরদেহ খুব শিগগিরই দেশে নিয়ে আসা হবে। যত দ্রুত সম্ভব। তবে সময়টা ফিক্সড করে বলা যাবে না। একটা দেশে যুদ্ধ চলছে, সেখানে মানুষ ঢুকতে পারছে না। আমাদের আন্তরিকতা শতভাগ আছে। আন্তরিকতা ও প্রচেষ্টা সবই আছে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ইউক্রেনে হামলা চালাচ্ছে রাশিয়া। যুদ্ধের কারণে ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দর চ্যানেলে আটকে পড়ে বাংলার সমৃদ্ধি। ২ মার্চ রাত ৯টা ২৫ মিনিটে জাহাজটি হামলার শিকার হয়। হামলায় জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার মো. হাদিসুর রহমান নিহত হন। জাহাজটিতে মোট ২৯ জন বাংলাদেশি নাবিক ছিলেন।
জীবিত ২৮ নাবিককে গত ৩ মার্চ বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ছয়টার দিকে ইউক্রেনের একটি বাংকারে নেওয়া হয়। পরে তাদের নিরাপদে রোমানিয়ায় নিয়ে যাওয়া হয়। আর ইউক্রেনের একটি বাংকারে ফ্রিজআপ করে রাখা হয় হাদিসুরের মরদেহ।
বিএসসি সূত্রে জানা গেছে, সিরামিকের কাঁচামাল ‘ক্লে’ পরিবহনের জন্য বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজটি তুরস্ক থেকে ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরের জলসীমায় পৌঁছায়। সেখান থেকে কার্গো নিয়ে ইতালি যাওয়ার কথা ছিল এটির। তবে যুদ্ধাবস্থা এড়াতে জাহাজটিকে সেখানে পৌঁছার পরপরই পণ্যবোঝাই না করে দ্রুত ফেরত আসার জন্য নির্দেশনা দেয় শিপিং কর্পোরেশন। শেষ মুহূর্তে পাইলট না পাওয়ায় ইউক্রেনের জলসীমা থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি বাংলাদেশের এই জাহাজ। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে অলভিয়া বন্দরের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।