মোস্তফা হোসেন বাবলু,স্টাফ রিপোর্টারঃ
সাতক্ষীরার কলারোয়ায় প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে বুধবার শেষ হলো হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সব চেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব। গতকাল বুধবার সকাল থেকে উপজেলার প্রতিটি মন্ডপে ভক্তদের মধ্যে ছিলো শুধু বিষাদের ছায়া। দেবী দূর্গা মাকে বিদায় দেয়ার জন্য হিন্দু ধর্মাবলীদের মধ্যে দিনভর ছিলো এ বিষাদের ছায়া। পঞ্জিকা অনুযায়ী, এবার দেবী মর্ত্যে আসছেন গজে (হাতিতে) চেপে। গজ বা হাতিতে চড়ে দেবীর আগমনের অর্থ হল শুভ। মনে করা হয়ে থাকে দেবী যদি গজে চড়ে মর্ত্যে আসেন তাহলে তিনি সঙ্গে করে সুখ-সমৃদ্ধি নিয়ে আসেন। হাতি হচ্ছে জ্ঞান এবং সমৃদ্ধির প্রতীক। আর আজ ৫ অক্টোবর বিজয়া দশমীতে দেবী মর্ত্য ছাড়বেন নৌকায় চড়ে। নৌকায় মনোকামনা পূর্ণ হওয়া বোঝানো হয়। ধরিত্রী হয়ে ওঠে শস্য শ্যামলা। কিন্তু সেই সঙ্গে অতি বর্ষণ বা প্লাবনের আশঙ্কাও দেখা যায়।
পৌরনিক কাহিনী মতে, ধর্মের গ্লানি ও অধর্ম রোধ, সাধুকে রক্ষা, অসাধু বধ এবং ধর্ম প্রতিষ্ঠার জন্য প্রতি বছর দূর্গতিনাশিনী দেবী দূর্গা ভক্তদের মাঝে অবির্ভূত হন। বিজয়াদশমীর দিনে র্মত্য ছেড়ে আবার ফিরে গেলেন কৈশালে স্বামীগৃহে দূর্গতিনাশিনী দেবী দূর্গা।
পৌরনিক কাহিনী মতে আরো জানাযায়, দূর্গদেবী হলেন ব্রক্ষার মানসকন্যা। যখন সংসারে অসুরের রাজত্ব চলছিলো, চারিদিকে অসুরের জয়, অসুরের দাপটে মানবকূল ত্রাহি ত্রাহি করছিলো, অসুর তাদের আসুরিক বৃত্তি দ্বারা সবার স্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছিলো, শান্তি-সমৃদ্ধি আর হিংসার আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিয়েছিলো। সেই আগুনে পুড়ে যাচ্ছিল মানুষের ভালো গুন বা মানবীয় সত্তা। তখন দেবী দূর্গাকে সৃজন করে ব্রক্ষা তাকে সর্বশক্তিতে ভরপুর করে অসুর বিনাশের জন্য র্মত্যে প্রেরন করেছিলেন। দূর্গ দেবী তার দিব্য শক্তির দ্বারা অসুরী শক্তি বা অপশক্তিকে (অসুরকে) পরাভুত করে পুন:শক্তির জন্য সমর্থ হয়েছিলেন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সেই যুগ যুগ ধরে চলে আসছে দূর্গা মায়ের মৃন্নয়ী মূর্তিতে চিন্ময়ী মূর্তির আরাধনা।
কলারোয়া উপজেলার পৌর সদরসহ অনুষ্ঠিত পূজা মন্ডপ গুলিতে গতকাল দশমী বিহিত পূজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে দিনভর ভক্তরা বিষন্ন মনে বিভিন্ন পূজা মন্ডপে দেবী দূর্গার বিদায়ের ক্ষনে ঘুরে ঘুরে দেখেন এবং নিজেদের মঙ্গল কামনায় দেবীর নিকট প্রার্থনা করেন।
কলারোয়া পূজা উৎযাপন কমিটির সভাপতি বাবু মনোরঞ্জন সাহা ও সিদ্ধীশ্বর বাবু জানান, এ বছর উপজেলায় ৪৬ টি মন্ডপে শান্তিপূর্ন ভাবে শারদীয় দূর্গা পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সব মন্ডপে নিরাপত্তা বাহিনীর কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করার জন্য তিনি কলারোয়া উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনরে প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। তিনি বলেন, গতকাল রাত সাতে ৬ টা থেকে বিভিন্ন মন্ডপে প্রতিমিা বিসর্জন শুরু হয়ে রাতেই প্রতিমা বিসর্জনের কাজ শেষ হয়েছে।