সেই শিশুকাল থেকেই ক্রিকেট আমার অমর প্রেম। আর এখন বার্ধকের ধূসর লগ্নে ক্রিকেট আমার অক্সিজেন। অবসর জীবনে অস্ট্রেলিয়ার পর্যটন শহর গোল্ড কোস্টের কাছাকাছি থেকে এবার আকণ্ঠ উপভোগ করছি বিশ্বকাপ ২০২৩। প্রতিটি ম্যাচ দেখছি শুরু থেকে শেষ অবধি। ইংরেজি বাংলা দুই ভাষায় লিখছি, ইলেকট্রনিক মিডিয়া , সোশ্যাল মিডিয়ায় নিয়মিত বিশ্লেষন করছি।সেই ১৯৭৫ শুরু হওয়া সব বিশ্বকাপের গুরুত্বপূর্ণ সব তথ্য আমার স্মৃতির ভাণ্ডারে সযত্নে সংরক্ষিত আছে. ২০ অক্টোবর থেকে প্রতিদিন এবারের বিকেল কাটে প্রিন্স আলেক্সান্দ্রা হসপিটালে। ছেলে শুভ্র ,নাতি ,নাতনীদের নিয়ে রোজিকে দেখতে যাই. ফেরার পথে মাউন্ট গাভার্ট শপিং মলে পিজা ফালুদা খেতে খেতে বড় স্ক্রিনে বিশ্ব কাপ দেখি। দেখতে দেখতে ২৫ টি খেলা হয়ে গেলো। ভারত ,দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে আমাদের দুটি দল অস্ট্রেলিয়া ,নিউ জিল্যান্ড শিরোপা দৌড়ে এগিয়ে আছে. ৬ নভেম্বর বাংলাদেশে উড়ে যাবো। হয়তো শেষ ম্যাচগুলোতে রেডিও ভূমিতে কথা বলবো ,হয়তো দুই একটি টেলিভশন চ্যানেলে যাবো।
ভালো হত যদি আমাদের বাংলাদেশ প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী খেলতে পারতো। ভালো লাগছে আমার একসময়ের কাজের দেশ আফগানিস্তান নক্ষত্রের পতন ঘটিয়েছে। টিউলিপের দেশ হারিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকাকে। ভারতে খেলা বিশ্ব কাপে দুটি দক্ষিণ এশিয়ার দেশ ফাইনাল খেললে ভালো হত। আপাতত সেই সম্ভাবনা সীমিত। চাইবো শিরোপাটা যেন এশিয়ায় থেকে যায়.
জানিনা ২০২৭ বিশ্বকাপ দেখার সুযোগ দিবেন কিনা বিধাতা। তবু যে ১৩ টি বিশ্বকাপ উপভোগ করার সুযোগ পেলাম তার জন্য সৃষ্টিকর্তার কাছে কৃতজ্ঞ। প্রতিটি ফুটবল বিশ্বকাপের মত ক্রিকেট বিশ্ব কাপ শেষ হবার সময় মনে হয় যেন প্রিয়জনদের বিদায় জানাচ্ছি। একেই হয়তো বলে নিষ্পাপ ভালোবাসা।
লেখাঃ সালেক সুফী,সিনিয়র ক্রীড়া বিশ্লেষক ও আন্তর্জাতিক জ্বালানী পরামর্শক