বুধবার, ১৫ মে ২০২৪

সদ্যপ্রাপ্ত সংবাদ
কলারোয়ার হেলাতলা ইউনিয়নে ভোটের হাওয়া আ’লীগ- বিএনপি সতন্ত্র প্রার্থী সাতজন
কলারোয়ার হেলাতলা ইউনিয়নে ভোটের হাওয়া আ’লীগ- বিএনপি সতন্ত্র প্রার্থী সাতজন

কলারোয়ার হেলাতলা ইউনিয়নে ভোটের হাওয়া আ’লীগ- বিএনপি সতন্ত্র প্রার্থী সাতজন

নতুন সূর্য ডেস্কঃ
আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে কলারোয়া উপজেলার হেলাতলা ইউনিয়নে নির্বাচনী হাওয়া বইতে শুরু করেছে। হাট বাজারে চায়ের দোকানগুলোতে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নিয়ে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। সেই সাথে সম্ভাব্য প্রার্থীরাও মাঠ পর্যায়ে গণসংযোগ বাড়িয়েছেন, লবিং শুরু করেছেন দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশায়।নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা না হলেও ইতোমধ্যে হেলাতলা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীরা প্রার্থিতার জানান দিতে অগ্রীম ব্যানার ফেস্টুন ও প্যানা বোর্ড টানিয়েছেন। নির্বাচনকে সামনে রেখে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের কেউ কেউ ভোটারদের দিচ্ছেন আগাম প্রতিশ্রুতি। এছাড়াও নানা কৌশল অবলম্বন করে ভোটারদের অনুকূলে নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন অনেকেই। সেই সাথে দলীয় সমর্থন পেতে চলছে তদবির।সেক্ষেত্রে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থীকে মাঠে দেখা গেলেও তুলনামূলক কম প্রার্থী দেখা গেছে দীর্ঘদিন ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপির।জানা গেছে, আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আবারও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিতে চান হেলাতলা ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন।সেই সাথে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিতে মাঠে থেকে প্রচার প্রচারণায় চালাচ্ছেন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আবু তালেব সরদার৷এদিকে, দলীয় মনোনয়নের প্রত্যাশায় দীর্ঘদিন ধরে প্রচার প্রচারণা ও বিভিন্ন ধরনের সেবা মূলক কাজ নিয়ে মাঠে রয়েছেন উপজেলা তাঁতীলীগের সাবেক প্রতিষ্ঠতা সভাপতি অধ্যক্ষ বিল্লাল হোসেন আবীর, উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সরদার আনার আলী, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আব্দুল মাজেদ বিশ্বাস ও হেলাতলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি সফিকুল ইসলাম৷অপরদিকে, বিএনপির সম্ভব্য প্রার্থী হিসেবে মাঠে রয়েছেন জেলা যুবদলের সহ-সভাপতি সরদার মুনছুর আলী। গত নির্বাচনে তিনি ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে অংশগ্রহণ করেছিলেন৷নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে বর্তমান চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, গত নির্বাচনে হরিন প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হই। আমি কোন দলের সাথে নেই। বরং দলমত নির্বিশেষে জনমানুষের পাশে থাকার লক্ষ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করতে চাই৷ পুনরায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলে এলাকার উন্নয়নকল্পে পরিকল্পনায় থাকা কোঁঠাবাড়ি ব্রিজ তৈরী ও চেড়াঘাট-শাহপুরসহ ৩৮টি নতুন আইডি ভুক্ত রাস্তা সংস্কারের অসমাপ্ত কাজগুলো পর্যায়ক্রমে সমাপ্ত করার লক্ষ্যে কাজ করে যাব।

সাবেক চেয়ারম্যান আবু তালেব সরদার বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবো৷ নির্বাচিত হলে দুর্নীতিমুক্তভাবে এলাকার জনমানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়নে আলোকিত ইউনিয়ন গঠনে নিরলসভাবে কাজ করে যাব। সোলার প্যানেল লাইটিং ব্যবস্থা ও প্রতিটি পাড়ায় মাদক এবং বাল্য বিবাহ প্রতিরোধে ক্লাব তৈরি করে সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করে প্রত্যেক মানুষের দোরগোড়ায় ইউনিয়ন পরিষদের প্রাপ্ত সেবা পৌঁছে দেব। এলাকাটি অবকাঠামোগত উন্নয়নের দিক দিয়ে অনেক পিছিয়ে রয়েছে৷ লক্ষ্য বাস্তবায়নে ইউনিয়নের সকল অবহেলিত রাস্তাঘাট পাকা ও সংস্কার করার লক্ষ্যে কাজ করে যাবো।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সরদার আনসার আলী বলেন, আমি আওয়ামী লীগ পরিবারের সন্তান ও সক্রিয়ভাবে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। মনোনয়ন পেলে নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করবো৷ নির্বাচিত হলে ইউনিয়নবাসীকে সাথে নিয়ে সকল উন্নয়ন কাজ জবাবদিহি ও দুর্নীতিমুক্তভাবে বাস্তবায়ন করব।

উপজেলা তাঁতীলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অধ্যক্ষ বিল্লাল হোসেন আবীর বলেন, মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচিত হলে মানুষের ন্যায্য অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবো, সেই সাথে সাথে এলাকার যুবকদের সাথে নিয়ে উদ্যোগমুখী উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করা, বর্তমান যুব সমাজকে সাথে নিয়ে মাদকমুক্ত সমাজ গঠনে ক্লাব তৈরি করে প্রচার প্রচারণা ও সচেতনতায় উদ্বুদ্ধ করবো। পাশাপাশি এলাকাভিত্তিক পাঠশালা তৈরি করে শান্তিপূর্ণ সমাজ গঠনে কাজ করবো৷

ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শফিকুল ইসলাম বলেন, হেলাতলা ইউনিয়নকে দুর্নীতি ও মাদক মুক্ত এবং রাস্তার উন্নয়ন করে দূষণ মুক্ত পরিবেশ তৈরি ও জনদুর্ভোগ মুক্ত করতে কাজ করে যাচ্ছি। দল মনোনয়ন দিলে আসন্ন নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে অংশ গ্রহণ করবো। দল যাকেই মনোনীত করবে দলের সিদ্ধান্তে তাকে সমর্থন করে কাজ করবো৷

ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মাজেদ বিশ্বাস বলেন, ইউনিয়নের সকল ওয়ার্ডের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকগণ দল থেকে আমাকে মনোনয়ন দেওয়ার জন্য সকলে লিখিত মতামত দিয়েছেন দলের প্রধানের নিকট৷ দল থেকে আমি মনোনয়ন পেলে ইউনিয়নের সকল ওয়ার্ডের নেতা কর্মীদের সুসংগঠিত করে ঐক্যবদ্ধ হয়ে উন্নয়নের জন্য কাজ করবো৷ তরুণ প্রজন্মকে মাদকের ভয়াল গ্রাস থেকে মুক্ত করে মসজিদ, মাদ্রাসা, মন্দির ও রাস্তা সংস্কারের জন্য কাজ করবো৷

বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী সরদার মুনসুর আলী বলেন, বিএনপি সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চায়৷ গত নির্বাচনে ধানের শীষের প্রার্থী হয়ে সক্রিয় ভাবে নির্বাচনে অংশ করেছি৷ দ্রুত দেশে ফিরে এবারও নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করবো৷ তবে দল থেকে এখনও চুড়ান্ত কোন সিদ্ধান্ত পায়নি, দলের সিদ্ধান্তে কাজ করবো৷ নির্বাচিত হতে পারলে হেলাতলা ইউনিয়ন পরিষদকে মডেল ইউনিয়নে রূপান্তরিত করে জলাবদ্ধতা নিরসনের লক্ষ্যে কাজ করার পাশাপাশি ছিন্নমূল মানুষের হয়ে কাজ করার চেষ্টা করব। নির্যাতিত হয়ে বিদেশে অবস্থান করলেও এলাকার জন্য কাজ করছি৷ দল-মত-নির্বিশেষে আমাদের প্রত্যাশা সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন।

কলারোয়া উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মনোরঞ্জন বিশ্বাস জানান, কেন্দ্রীয়ভাবে নির্বাচনী তফশীল ঘোষণা হলেই কলারোয়া উপজেলার সকল ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হবে। হেলাতলা ইউপি নির্বাচনে মোট ভোটার ১৬ হাজার ৮৭৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৮হাজার ৩৬৫ জন ও মহিলা ভোটার ৮ হাজার ৫০৮ জন৷

About The Author

Related posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: কপি থেকে বিরত থাকুন,ধন্যবাদ।