শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

মিয়ানমারে ১৯ বিক্ষোভকারীর মৃত্যুদণ্ড
মিয়ানমারে ১৯ বিক্ষোভকারীর মৃত্যুদণ্ড

মিয়ানমারে ১৯ বিক্ষোভকারীর মৃত্যুদণ্ড

নতুন সূর্য ডেস্কঃ

মিয়ানমারে ১৯ বেসামরিক বিক্ষোভকারীকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে দেশটির জান্তা সরকারের আদালত। এক সামরিক কর্মকর্তার সহযোগীকে হত্যার অভিযোগে শুক্রবার (৯ এপ্রিল) তাদেরকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় বলে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

দেশটির সামরিক বাহিনীর মালিকানাধীন মিওয়াদ্দি টেলিভিশনে শুক্রবার জানানো হয়, সামরিক আদালতের মাধ্যমে দেশটির ১৯ বেসামরিক ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে জান্তা সরকার। তাদের বিরুদ্ধে গত মাসে ইয়াঙ্গুনের উত্তর ওক্কালাপা জেলায় মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর একজন ক্যাপ্টেনকে মারধর এবং নির্যাতন করে তার এক সহযোগীকে হত্যার অভিযোগ আনা হয়।

এরপর ওই জেলায় সামরিক আইন জারি করা হয়। ফলে সেখানে সামরিক আদালত পরিচালনায় কোনো বাধা ছিল না। আর শুক্রবার ১৯ বেসামরিক বিক্ষোভকারীকে সেই আদালতের মাধ্যমে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হলো।

রয়টার্স জানিয়েছে, মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আসামীদের মধ্যে বর্তমানে ১৭ জনই পলাতক রয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। এছাড়া মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে ১৭ বছর বয়সী একজন কিশোরীও রয়েছে।

এদিকে মিয়ানমারে সামরিক বাহিনীর গুলিতে কমপক্ষে আরও ৬০ জন বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছেন। শুক্রবার রাত থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত চালানো রাতভর অভিযানে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে বিপুল সংখ্যক সাধারণ মানুষের এই মৃত্যুর ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।

সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, মিয়ানমারের বৃহত্তম শহর ইয়াঙ্গুন থেকে ৯১ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে অবস্থিত বাগো শহরে শুক্রবার রাত থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত রাতভর অভিযান চালায় দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী। এই অভিযানেই সেখানে কমপক্ষে ৬০ বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হয়।

এদিকে ভুক্তভোগী পরিবার বা স্থানীয়রা কেউই নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করতে পারেননি। নিহতদের বেশিরভাগেরই মৃতদেহ নিরাপত্তা বাহিনী নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। রাতভর চালানো এই অভিযানে সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে সামরিক বাহিনী প্রচলিত অস্ত্রের পাশাপাশি মেশিনগান, গ্রেনেড এবং মর্টার শেল ব্যবহার করে বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম রেডিও ফ্রি এশিয়ার এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, শুক্রবার মিয়ানমারের বাগো শহরে বৃষ্টির মতো গুলিবর্ষণ করেছে পুলিশ ও সেনাবাহিনী। রাজপথে বিক্ষোভকারীদের ব্যারিকেডও সরিয়ে দিয়েছে তারা। আন্দোলনের সময় সেসব ব্যারিকেড বিক্ষোভকারীরা রাস্তার ওপর রেখেছিলেন।

গত বছরের নভেম্বরের নির্বাচনে দেশটির নেত্রী অং সান সু চি নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্র্যাসি (এনএলডি) বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে আবারও ক্ষমতায় আসে। সামরিক বাহিনী এই নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুললেও নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে জানিয়ে দেয়।

এর পরিপ্রেক্ষিতে দুই মাস আগে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী অভ্যুত্থানের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে এক বছরের জন্য দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করে। তখন থেকে প্রায় প্রত্যেকদিন মিয়ানমারের গণতন্ত্রকামী বিক্ষোভকারীরা অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে আসছেন।
সূত্র: রয়টার্স

About The Author

Related posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: কপি থেকে বিরত থাকুন,ধন্যবাদ।