‘
সরদার ইউনুছ আলী, পাইকগাছা প্রতিনিধিঃ
খুলনার পাইকগাছায় উপকূলীয় এলাকার মানুষের কাছে আতঙ্কের নাম বেড়িবাঁধ। গত এক যুগের মধ্যে ঘূর্ণিঝড় আইলা, ফনির তাণ্ডব দেখেছে উপকূলবাসী। সর্বশেষ গত বছর বুলবুল আঘাত হানে। এই একই সময়ে সুপার সাইক্লোন আম্পান লণ্ডভণ্ড করে দেয় দক্ষিণ উপকূল। উপকূলীয় উপজেলা পাইকগাছা বিধ্বস্ত হয় হাজার হাজার ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, গাছপালা, মৎস্য ঘের, জমির ফসল আর গবাদি পশুর মৃত্যুতে সর্বস্বান্ত হয় এই জনপদের মানুষ। সরকারের ব্যাপক সহযোগিতায় আম্পানে বিধ্বস্ত বাঁধগুলো মেরামত চলমান। এরমধ্যে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস আতঙ্ক কাটা ঘা শুকাতে না শুকাতেই আরো একটি বিপর্যয়ের আশঙ্কায় নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে উপকূলবাসী।
আজো আগের সেই স্মৃতি বয়ে বেড়াচ্ছে উপকূলবাসী। কাটিয়ে উঠতে পারেনি সেই ক্ষতি। জনপদে চলছে অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান ও সুপেয় পানির তীব্র হাহাকার। সব হারিয়ে নিজের কিংবা অন্যের জমিতে কোনোরকমে মাথা গোঁজার মনো ঘর বেঁধে বাস করছেন অনেকেই। নদীভাঙন সংস্কার করা হলেও কয়েকটি স্থানের বেঁড়িবাধ এখনো রয়েছে জরাজীর্ণ অবস্থায়।
পাইকগাছা উপজেলা প্রশাসন বলছে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস মোকাবেলায় তারা ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। শারীরিক নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে ঘূর্ণিঝড়ে কয়রার মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে আনতে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম, প্রস্তুত রাখা হয়েছে মেডিকেল টিম। এরই মধ্যে কয়রাবাসীকে সতর্ক করতে মাইকিং অব্যাহত রয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবিএম খালিদ হোসেন সিদ্দিকী বলেন, পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ইয়াস বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানতে পারে। এ অবস্থায় ঘূর্ণিঝড়কে কেন্দ্র করে ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেম্বরদের প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেয়া হয়েছে। করোনার মধ্যে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখা ও আশ্রয় কেন্দ্রের পাশাপাশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠাকে কাজে লাগানো হবে। পর্যাপ্ত চাল, শুকনা খাবার, নিরাপদ পানি ও নগদ টাকা মজুদ রাখা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতি এড়াতে কাজ করছেন রেড ক্রিসেন্ট, সিপিপি, বেসরকারি এনজিওর স্বেচ্ছাসেবকরা।
স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মো, আক্তারুজ্জামান বাবু জানান, ঘূর্ণিঝড় ইয়াস মোকাবেলায় উপজেলা প্রশাসনসহ দলীয় নেতাকর্মীদের জনগণের জানমাল রক্ষাসহ সকলকে আতঙ্কিত না হয়ে সাহস জোগানোর জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সরকারি ও আমার ব্যক্তিগত পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত শুকনা খাবার ও পানির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। তিনি আরো জানান, গত আম্পানেও তিনি ঘূর্ণিঝড়ের রাতে এলাকায় জনগণের পাশে হয়েছে।