সোমবার, ২০ মে ২০২৪

সদ্যপ্রাপ্ত সংবাদ
ডুমুরিয়ায় হত্যার অভিযোগঃ সাড়ে ৩ মাস পর বৃদ্ধের লাশ উত্তোলন
ডুমুরিয়ায় হত্যার অভিযোগঃ সাড়ে ৩ মাস পর বৃদ্ধের লাশ উত্তোলন

ডুমুরিয়ায় হত্যার অভিযোগঃ সাড়ে ৩ মাস পর বৃদ্ধের লাশ উত্তোলন

মোঃ ইমরান শেখ (চুকনগর) খুলনাঃ

ডুমুরিয়ায় সাড়ে ৩ মাস পর ময়নাতদন্তের জন্য আব্দুস সাত্তার আকুঞ্জী নামে এক বৃদ্ধের এর লাশ উত্তোলন করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশে রোববার দুপুরে উপজেলার খরসঙ্গ গ্রামের পারিবারিক কবরস্থান থেকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে তার লাশ উত্তোলন করা হয়।

গত ৭ জুলাই খরসঙ্গ গ্রামের ২য় পক্ষের স্ত্রীর বাড়িতে পরিকল্পিতভাবে আব্দুস সাত্তার আকুঞ্জীকে হত্যা করা হয়েছে বলে আদালতে মামলা দায়ের করেন ১ম পক্ষের বড় পুত্র নূর মোহাম্মাদ আকুঞ্জী। প্রথম পক্ষের পুত্র কন্যাদের উপেক্ষা করে ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফন করা হয় তার লাশ।

মামলা সূত্রে জানা যায়, আব্দুস সাত্তার আকুঞ্জীর বাড়ি ডুমুরিয়া উপজেলার আন্দুলিয়া গ্রামে। তিনি ২য় পক্ষের স্ত্রী ও কন্যা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে খরসঙ্গ গ্রামে বসবাস করতেন। তিনি পারিবারিক একটি সম্পত্তি ১৬ লক্ষ টাকা বিক্রি করে বড় পুত্রকে ব্যবসার জন্য ১ লক্ষ টাকা দেন। পরবর্তীতে ১ম পক্ষের ছোট ছেলে ও মেয়েকে টাকার অংশ দেয়ার বিষয় নিয়ে ২য় পক্ষের স্ত্রী ও মেয়ের সাথে মৃত্যুর আগের দিন রাতে ঝগড়া হয়। ঝগড়ার একপর্যায়ে ২য় পক্ষের জামাই দেয়ালের সাথে ধাক্কা দিলে মাথায় আঘাত পেয়ে আব্দুস সাত্তার রাত ১টায় মারা যান। মৃত্যুর বিষয়টি ১ম পক্ষের ছেলে মেয়েদের না জানিয়ে দ্রুত লাশ দাফনের চেষ্টা করেন। বিভিন্ন সূত্রে খবর পেয়ে ১ম পক্ষের ছেলে মেয়ে ওই বাড়িতে গেলে লাশ দেখাতে অস্বীকৃতি জানান। পরবর্তীতে পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই তড়িঘড়ি করে লাশ দাফন করে দেন।

এদিকে আব্দুস সাত্তার আকুঞ্জীকে (৭০) পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে দাবী করে ঘটনার ১ মাস ৮ দিন পর ২৩ আগস্ট খুলনা অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করা হয়। নিহতের বড় ছেলে নূর মোহাম্মাদ বাদী হয়ে ৬ জনকে আসামি করে এ মামলা দায়ের করলে আদালত বিষয়টি আমলে নিয়ে লাশ উত্তোলনসহ ঘটনার তদন্তের নির্দেশনা দেন।

পরে আব্দুস সাত্তার আকুঞ্জীর বড় পুত্রের দায়েরকৃত হত্যা মামলার প্রেক্ষিতে ময়নাতদন্তের জন্য রোববার দুপুরে তার পিতার লাশ উত্তোলন করা হয়। এদিকে লাশ উত্তোলনের খবর পেয়ে স্থানীয় উৎসুক জনতা ঘটনাস্থলে ভিড় জমান। লাশ উত্তোলনের সময় রঘুনাথপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ ইমদাদুল হক, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস আই এনায়েত সিকদার ও এস আই আমিনুল ইসলামসহ সাংবাদিক ও ইউপি সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

মামলার বাদী নূর মোহাম্মাদ আকুঞ্জী ও তার ভাই আছাদুজ্জামান অভিযোগ করে বলেন; অর্থ সম্পদ হাতিয়ে নিতে ঘটনার দিন তাকে ২য় পক্ষের স্ত্রী ও মেয়ে জামাই পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। আমাদের পিতা সম্পূর্ণ সুস্থ ছিলেন। মামলাটি সুষ্ঠু তদন্তে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা। অপরদিকে আব্দুস সাত্তারের ২য় পক্ষের স্ত্রী আলেয়া বেগম ও মেয়ে রিনা বেগম বলেন; তাদের অভিযোগটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। হয়রানীমূলক মামলা দিয়ে আমাদের অর্থ সম্পদ হাতিয়ে নেয়ার জন্য তারা মরিয়া হয়ে উঠেছে।

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সঞ্জীব দাশ বলেন, আদালতের নির্দেশে ভিক্টিম মৃত আব্দুস সাত্তার আকুঞ্জীর সুরোতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করার লক্ষ্যে কবর থেকে লাশ উত্তোলন করা হয়েছে

About The Author

Related posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: কপি থেকে বিরত থাকুন,ধন্যবাদ।