খেলাধুলা ডেস্কঃ
ডিয়েগো ম্যারাডোনা অবসর নেওয়ার পর কত খেলোয়াড়কেই তো নতুন ম্যারাডোনা বলা হয়েছিল। আরিয়েল ওরতেগা, হাভিয়ের সাভিওলা, পাবলো আইমার, হুয়ান রোমান রিকেলমে, মার্সেলো গায়ার্দো—নাম লেখা শুরু করলে শেষ হবে না হয়তো। কিন্তু পরবর্তী ম্যারাডোনা হিসেবে যিনি নিজেকে বাকি সবার চেয়ে ছাড়িয়ে গেছেন, তিনি নিঃসন্দেহে লিওনেল মেসি। এমনকি অনেকেই মনে করেন মেসি খোদ ম্যারাডোনাকেও ছাড়িয়ে গিয়েছেন।
ম্যারাডোনার অবসরের পর এই মেসিকেই আর্জেন্টাইন সমর্থকেরা ভেবেছেন আশার বাতিঘর। ম্যারাডোনা নিজেও বিভিন্ন সময়ে মেসিকে নিজের যোগ্য উত্তরসূরির মর্যাদা দিয়েছেন। সেই পূর্বসূরি ম্যারাডোনাই যখন সবাইকে ছেড়ে পাড়ি জমালেন পরপারে, কেমন লেগেছিল মেসির? স্প্যানিশ টেলিভিশন চ্যানেল ‘লা সেক্সতা’র জর্দি ইভোলের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে মেসি জানিয়েছেন ম্যারাডোনাকে নিয়ে নিজের অনুভূতির কথা।
২০১০ বিশ্বকাপে মেসির সরাসরি গুরুর ভূমিকা পালন করেছিলেন ম্যারাডোনা, জাতীয় দলের কোচ হিসেবে। সেবার যদিও মেসি-ম্যারাডোনার জুটি আর্জেন্টিনাকে প্রত্যাশিত সাফল্য এনে দেয়নি। ঘোচাতে পারেনি বিশ্বকাপ-আক্ষেপ। সেই গুরুই যখন অসীমের পানে পাড়ি জমালেন, মেসি বলে প্রথমে বিশ্বাসই করতে পারেননি, ‘আমার এখনো বিশ্বাস হয় না ম্যারাডোনা নেই যে। আমি আমার বাবার মাধ্যমে জানতে পারি খবরটা। উনি আমার বাসাতেই ছিলেন, উনিই আমাকে ম্যারাডোনা মারা যাওয়ার সংবাদটা দেন। হতভম্ব হয়ে গিয়েছিলাম। অস্বাভাবিক লাগছিল। পুরো ব্যাপারটাই ছিল আমার কাছে একটা ধাক্কা। এমনকি এখনো আমি এটা বিশ্বাস করতে পারি না। খুবই কষ্টদায়ক একটা অনুভূতি।’
ম্যারাডোনা চলে যাওয়ার পর সবাই সবার মতো কিংবদন্তিকে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। ব্যতিক্রম কিছু হননি মেসিও। বরং ম্যারাডোনাকে দেওয়া মেসির শ্রদ্ধার্ঘ্যটা বেশ অভিনব ছিল। কিংবদন্তির বিদায়ে তাঁকে স্মরণ করতে সেদিন সেই নিওয়েলসের স্মৃতিকেই টেনে এনেছিলেন মেসি। ওসাসুনার বিপক্ষে গোল করে বার্সেলোনার জার্সি খুলেছেন, দেখিয়েছেন গায়ে চাপানো নিওয়েলসের জার্সিটা। যে জার্সি পরে তাঁর প্রিয় ক্লাবে খেলতেন ম্যারাডোনা। ত্রিনকাওর কাছ থেকে বল পেয়ে ডি-বক্সের ওপর ডিফেন্ডারদের কাটিয়ে যে শট নিয়েছেন, তা ঠেকানো সম্ভব ছিল না। এরপরই বার্সেলোনার জার্সিটা খুলেছেন। দেখিয়েছেন ‘১০ নম্বর’ জার্সিসংবলিত নিওয়েলসের জার্সি।
নিজের ওই উদ্যাপন নিয়েও কথা বলেছেন মেসি। জানিয়েছেন উদ্যাপন নিয়ে তাঁর পরিকল্পনার কথা, ‘নিউয়েলসের কেউ একজন আমাকে জার্সিটা দিয়েছিল। আমি জার্সিটা আগলে রেখেছিলাম। মনে হলো, এখনই জার্সিটা বের করার সময়। ওদিন আমাকে গোল করতেই হতো। হুট করেই গোলটা চলে এল ওই দিন। যখন আমি একেবারেই গোল আসবে, এটা ভাবিনি।