লেখকঃ ড. আবু যুবায়ের
রমজানের রহমত দশকের তৃতীয় দিন আজ। রোজার মাস অঢেল নেকী অর্জনের মাস। নামাজ, রোজা, দান-খয়রাত যেমন ইবাদত, তেমনি পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতাও ইবাদতের অন্তর্ভুক্ত। এমনটি পবিত্রতাকে হাদিসে ইমানের অঙ্গ বলা হয়েছে। কারণ, ইসলাম কোন আনুষ্ঠানিকতার নাম নয়। এটি একটি বাস্তব ধর্ম। শরীরের হক আদায় করা, শরীর সুস্থ রাখাও ইসলামের সৌন্দর্য। বর্তমানে করোনা পরিস্থিতিতে আমরা ইসলামের শিক্ষা গ্রহণ করে সুস্থ থাকতে পারি এবং করোনা থেকে বাঁচতে পারি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনা প্রতিরোধের অন্যতম উপায় হলো উত্তমরূপে হাত ধোয়া। একজন মুসলমান পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে ন্যূনতম পাঁচবার অজু করে থাকেন। আর প্রতিবারের ওজুতে কব্জি পর্যন্ত দুই হাত তিন বার করে ধৌত করেন এবং দ্বিতীয়বার আবার দুই হাত তিন বার করে কনুই পর্যন্ত ধৌত করেন। অর্থাৎ একবারের ওজুতে কমচে কম ছয়বার হাত ধৌত করতে হয়। এই হিসাবে দিনে ন্যূনতম ৩০ বার হাত ধোয়া পড়ে। এছাড়াও কুরআন তেলওয়াতের এবং নফল নামাজের পূর্বেও অনেক ক্ষেত্রে ওজু করা লাগে। তাছাড়া প্রতিবার খাবার আগে এবং পরে দুই হাত কবজি পর্যন্ত ধোয়া সুন্নত। এভাবে বারবার হাত ধোয়ার মাধ্যমে আমরা করোনা প্রতিরোধ করতে পারি। হাদিসের আরও শিক্ষা হলো, হাচি দেবার সময় মুখ অন্যদিকে সরিয়ে নেয়া এবং রুমাল বা অন্যকোন কাপড় ব্যবহার করা। বর্তমানে ডাক্তার ও রোগ-বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, হাচি দেবার সময় মুখে রুমাল বা অন্যকোন কাপড় ব্যবহার করা করোনা প্রতিরোধের অন্যতম কার্যকারী উপায়। চিকিৎসকবৃন্দ আরও বলছেন যে, পয়ঃকার্যের মাধ্যমেও করোনা ছড়াতে পারে। পায়খানার পর পানি ব্যবহার না করলে এবং হাত ভালভাবে ধৌত না করলে করোনার জীবাণু কাপড়ে লেগে পরবর্তিতে সংক্রমণ ঘটাতে পারে। আজকাল উন্নত ও পশ্চিমা দেশগুলোতে বেশীরভাগ সময়ে পায়খানার পর শুধুমাত্র টিস্যু ব্যবহার করা হয়, কোন পানি ব্যবহার করা হয় না। এটা করোনা সংক্রমণের ঝুঁকিকে বাড়িয়ে তোলে। কিন্তু ইসলাম কত সুন্দর ধর্ম! আমাদের মহানবীর (সাঃ) সুন্নত হলো, পায়খানার পর ঢেলা-কুলুপ বা টিস্যু ব্যবহারের পর পানি ব্যবহার করা। যারা পায়খানার পর ঢেলা-কুলুপ বা টিস্যু ব্যবহারের পর পানি ব্যবহার করে তাদের প্রশংসায় মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনে আয়াত নাজিল করেছেন। এমনকি পায়খানার পর তিনবার পানি ব্যবহার করা ভিন্ন আর একটি সুন্নত। এছাড়াও টয়লেটকার্য সম্পাদনের পর মাটি বা সাবান দিয়ে হাত ভালভাবে ধৌত করাও ইসলামের শিক্ষা। ইসলামের পরিষ্কার-পরিছন্নতার নিয়মকানন অনুসরণ করে আমরা করোনা প্রতিরোধ করতে পারি।