সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪

সদ্যপ্রাপ্ত সংবাদ
যে কারণে গুগল আর্থে ফিলিস্তিনের গাজা ঝাপসা দেখায়
যে কারণে গুগল আর্থে ফিলিস্তিনের গাজা ঝাপসা দেখায়

যে কারণে গুগল আর্থে ফিলিস্তিনের গাজা ঝাপসা দেখায়

নতুন সূর্য ডেস্কঃ

গাজার ধ্বংসচিত্র তুলে ধরার জন্য যে গবেষকেরা কাজ করছেন, তারা হামলার ব্যাপারে নিশ্চিত হতে চাইছেন স্যাটেলাইটের ছবি দেখে। কিন্তু গুগল আর্থে গাজার একটি গাড়িও দেখা প্রায় অসম্ভব। বেশিরভাগ ছবি খুবই কম রেজল্যুশনের এবং ঝাপসা। তদন্তকারীরা বলেন, আমরা যে ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিনি অঞ্চলের কোনো হাই-রেজল্যুশনের ছবি পাই না, সে কারণে আমাদের কাজ অনেকটাই বাধাগ্রস্ত হয়।

কোন এলাকায় হামলা হওয়ার পর ঠিক কোথায় হামলাটি হয়েছে, বাড়িঘর কতটা ধ্বংস হয়েছে, কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, এসব তথ্য জানার জন্য গবেষকরা গুগল ম্যাপের ওপর অনেকখানি নির্ভর করেন। তবে সবচেয়ে ঘন জনবসতিপূর্ণ অঞ্চল হয়েও গুগল ম্যাপে গাজা ঝাপসা দেখায়। এছাড়াও ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিন অঞ্চলের অধিকাংশ জায়গাই গুগল আর্থে ঝাপসা করে রাখা হয়েছে। সেখানে স্যাটেলাইটে তোলা কম-রেজল্যুশনের ছবিই দেয়া আছে। কিন্তু স্যাটেলাইট কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে এর চেয়ে আরও অনেক হাই-রেজল্যুশনের ছবি পাওয়া যায়।

কেবিএ নামের আইনটির অধীনে যুক্তরাষ্ট্রের স্যাটেলাইট ছবি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো ইসরায়েল বা ফিলিস্তিন এলাকার কেবল কম রেজল্যুশনের ছবিই বিক্রি করতে পারে, যার পিক্সেলের সাইজ কোনোভাবেই দুই মিটারের (সাড়ে ছয় ফুট) কম হতে পারবে না। এর মানে হচ্ছে একটা গাড়ির সাইজের বস্তু ছবিতে কোনোমতে অনুমান করা যাবে মাত্র, এর বেশি নয়।

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মহাকাশ কর্মসূচির প্রধান আমনন হারারি গতবছর বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এ প্রসঙ্গে বলেছিলেন, ‘আমরা সবসময় চাই আমাদের সবচেয়ে কম রেজল্যুশনের ছবি যেন দেওয়া হয়। আমরা সবসময় চাই ছবিতে যেন আমাদের খুব পরিষ্কারভাবে দেখা না যায়, যেন একেবারে ঝাপসা দেখায়।’

কিন্তু কেবিএ হচ্ছে এ ধরনের একমাত্র আইন, যার বলে একটি পুরো দেশকে ঝাপসা করে রাখা হয়েছে। এই আইনে শুধু ইসরায়েলের কথা বলা হলেও অথচ ফিলিস্তিন অঞ্চলগুলোর বেলাতেও এটি প্রয়োগ করা হচ্ছে।

বেলিংক্যাট নামের একটি সাইটের সাংবাদিক এরিক টোলার এক টুইটে লিখেছেন, ‘গুগল আর্থে সবচেয়ে সাম্প্রতিক ছবি হচ্ছে ২০১৬ সালের এবং সেগুলো একেবারেই বাজে। আমি এলোপাথাড়ি সিরিয়ার কিছু গ্রামাঞ্চলের ওপর জুম করেছিলাম, সেখানে পর্যন্ত ২০১৬ সালের পর মাত্র বিশটির বেশি ছবি দেওয়া আছে।’

অন্যদিকে, গুগল বলছে, তারা খুব ঘনবসতিপূর্ণ অঞ্চলগুলোর বেলায় নিয়মিতভাবেই নতুন ছবি যোগ করার চেষ্টা করে। কিন্তু গাজর বেলায় সেটা মোটেই করা হয়নি। তাদের ছবিগুলো অনেক ধরনের সরবরাহকারীর কাছ থেকে আসে এবং যখন বেশি রেজ্যুলেশনের ছবি পাওয়া যায়, তখন তারা তাদের ম্যাপে সেগুলো দেয়ার সুযোগ বিবেচনা করে। তবে এই মূহূর্তে এরকম ছবি শেয়ার করার কোনো পরিকল্পনা তাদের নেই।

গুগল আর্থ বা অ্যাপল ম্যাপসের মতো প্ল্যাটফর্ম তাদের স্যাটেলাইট ছবির জন্য নির্ভর করে সেসব কোম্পানির ওপর, যারা এই স্যাটেলাইটগুলোর মালিক। এক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় দুটি কোম্পানি হচ্ছে ম্যাক্সার এবং প্ল্যানেট ল্যাবস। এই দুটি প্রতিষ্ঠান এখন ইসরায়েল এবং গাজর বেশ উচ্চ রেজল্যুশনের ছবি সরবরাহ করছে।

ম্যাক্সার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘মার্কিন আইনে সাম্প্রতিক পরিবর্তনের পর ইসরায়েল এবং গাজর ছবি এখন শূন্য দশমিক ৪ মিটার (৪০ সেন্টিমিটার) রেজল্যুশনে সরবরাহ করা হচ্ছে।’

এদিকে, প্ল্যানেট ল্যাবস জানিয়েছে, তারা এখন ৫০ সেন্টিমিটার রেজল্যুশনের ছবি সরবরাহ করে।

কিন্তু যারা ওপেন-সোর্স বা উন্মুক্ত সূত্র থেকে সংগ্রহ করা তথ্য দিয়ে অনুসন্ধান চালান, তারা খুব বেশি নির্ভর করেন বিনামূল্য ব্যবহার করা যায় এমন ম্যাপিং সফটওয়্যারগুলোর ওপর। কাজেই উচ্চ মাত্রার রেজ্যুলেশনের ছবি তারা চাইলেই সরাসরি পান না। সূত্র: বিবিসি

About The Author

Related posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: কপি থেকে বিরত থাকুন,ধন্যবাদ।