বুধবার, ৮ মে ২০২৪

সদ্যপ্রাপ্ত সংবাদ
জবিতে বাড়ছে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা
জবিতে বাড়ছে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা

জবিতে বাড়ছে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা

তাসদিকুল হাসান, জবি প্রতিনিধি

রাজধানীতে বাড়ছে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব। পুরান ঢাকার ঘিঞ্জি এলাকায় বসবাসকারীরা নিয়মিত আক্রান্ত হচ্ছেন এতে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারন শিক্ষার্থীদের ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা বাড়ছে আশংকাজনক হারে। সম্প্রতি ইদের ছুটি কাটিয়ে ঢাকায় ফিরেছে শিক্ষার্থীরা। ক্লাস-পরীক্ষা শুরুর পর থেকে অনেকরই দেখা যাচ্ছে ডেঙ্গুর লক্ষণজনিত  অসুস্থতা। মেডিকেল সেন্টারে রোজ ভীর জমছে শত শত শিক্ষার্থীর যার আশি শতাংশই ভুগছে জ্বরে কিংবা সর্দি কাশিতে। বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন বিভাগে সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা চলায় ডেঙ্গু পজিটিভ হওয়া সত্ত্বেও কিছু শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে আসছেন এতে ডেঙ্গু জ্বর মহামারী আকারে ছড়িয়ে পরার ধারণা করা হচ্ছে।

ঢাকায় এখন ডেঙ্গু রোগীর অনেক বেশী। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৫৮টি ওয়ার্ডে জরিপ চালিয়ে ২৮টি ওয়ার্ডে ডেঙ্গু পরিমাণমাপক ব্রুটো ইনডেক্সে ২০-এর বেশি পাওয়া গেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৬০ ব্রুটো ইনডেক্স হয়েছে ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডে। এই ওয়ার্ডটি পুরান ঢাকার সিদ্দিকবাজার, নওয়াবপুর রোড, হাজী ওসমান গনি রোড, নাজিরা বাজার লেন, কাজী আলাউদ্দীন রোড, ফুলবাড়িয়া পুরাতন রেলওয়ে স্টেশন নিয়ে গঠিত। দক্ষিণ সিটি এলাকায় ব্রুটো ইনডেক্স ৪০-এর বেশি পাওয়া গেছে আরও ৫টি ওয়ার্ডে। সেগুলো হলো ১৬, ১৮, ২২, ২৬ ও ৪৫ নম্বর ওয়ার্ড। বিশ্ববিদ্যালয়ের আশেপাশে উক্ত এলাকাগুলোতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বসবাস করে থাকে। তাই এদের মধ্যেই অনেকেই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

ডেঙ্গুতে আক্রান্ত আইন বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, “ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার পরও আমার ক্যাম্পাসে আসতে হচ্ছে। যেহেতু সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা চলছে বাসায় থেকে বিশ্রাম নেয়ার উপায় নেই। শেষবর্ষের পরীক্ষা না দিতে পারলে আমাকে এক বছর অপেক্ষা করতে হবে। আমার প্লাটিলেট এক লাখে নেমে এসেছে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে পরীক্ষা গুলো দিয়ে যাচ্ছি।”

জ্বরে আক্রান্ত আরেক শিক্ষার্থী বলেন, “জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় পুরান  ঢাকায় অবস্থিত যেখানকার অধিকাংশ বাড়িই ঘিঞ্জি পরিবেশে। মশা নিধনের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেই অনেক একালাতেই। আমি নিজেও গত দুই সপ্তাহ ধরে জ্বরে ভুগতেসি। ডেঙ্গু টেস্ট করিয়েছি। নেগেটিভ আসছে। তবে ডাক্তার বলেছেন যেন বেশী পানি পান করি আর ঔষধ নিই।”

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারের উপ-প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. মিতা শবনম জানান,” আমাদের এখানে রোজ শত শত শিক্ষার্থীরা আসছে যাদের আশি শতাংশই জ্বরে আক্রান্ত। আমরা আমাদের সর্বোচ্চ ট্রিটমেন্ট দিচ্ছি।”

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রকল্যাণ পরিচালক ও শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো: আইনুল ইসলাম বলেন,”আমরা খুব শীঘ্রই এ বিষয়ে একটি সেমিনার করবো। সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য আমরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিবো। তবে শিক্ষক শিক্ষার্থী সকলের নিজ নিজ জায়গা থেকে সচেতন থাকতে হবে।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামাল জানান, “ডেঙ্গু বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বেচ্ছাসেবক সংগঠন গুলোর কর্মসূচী ইতোমধ্যেই ঘোষনা হয়েছে। আমরা সিটি করপোরেশনকেও আরো তৎপর হওয়ার জন্য অনুরোধ করবো। বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি সিটি করপোরেশন এর তৎপরতা থাকলে এ দুরবস্থা থেকে দ্রুত উত্তরণ সম্ভব। “

About The Author

Related posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: কপি থেকে বিরত থাকুন,ধন্যবাদ।