বৃহস্পতিবার, ২ মে ২০২৪

সদ্যপ্রাপ্ত সংবাদ
সুস্থ্য হয়ে লেখাপড়া শিখে মায়ের দুঃখ ঘোচাতে চান তৌহিদ
সুস্থ্য হয়ে লেখাপড়া শিখে মায়ের দুঃখ ঘোচাতে চান তৌহিদ

সুস্থ্য হয়ে লেখাপড়া শিখে মায়ের দুঃখ ঘোচাতে চান তৌহিদ

শেখ শাহাজাহান আলী শাহিন:
তৌহিদ, বোয়ালিয়া গ্রামের এক অদম্য যুবক। জন্ম থেকেই যার নানা সমস্যার সাথে পরিচয়। তার মধ্যেই নিউমোনিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে সে হয়ে যায় প্রতিবন্ধী। তার ঘাড়ের হাড় উঁচু হয়ে যায়। এই সব সমস্যাকে মাথায় নিয়ে অদম্য ইচ্ছা শক্তির বলেই ৫ম শ্রেণী পাশ করে এলাকাবাসীর সহযোগীতায় ভর্তি হয় বোয়ালিয়া ইউনাইটেড মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে। সে সময় পিতা মারা যান, বেঁচে থাকার তাগিদে শুরু হয় জীবন সংগ্রাম। এর মধ্য দিয়েই শিক্ষকদের সহযোগীতায় ২০১৮ সালে এসএসসিতে ৩.০০ জিপিএ নিয়ে পাস করে সে। এলাকাবাসী, শিক্ষকদের সহযোগীতা নিয়ে এইচএসসি তে ভার্তি হয় বোয়ালিয়া কলেজে। তখনও দূর্ভাগ্য পিছু ছাড়েনি। অর্থের অভাবে বই কেনা ও ফরম পূরণ করতে পারছিল না, তখন তার কথা জেনে ‘‘আলোকিত কলারোয়া” নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সামাজিক সংগঠন এগিয়ে আসে। এই সংগঠনের সহযোগীতা নিয়ে বই কিনে এবং পরীক্ষার ফরম পূরণ করে সে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহন করে ২০২০ সালে এবং জিপিএ ৪.০৮ পেয়ে পাশ করে। কিন্তু এরই মধ্যে সে সংসার চালাতে থাকে ভ্যান চালিয়ে। দিনে দিনে বাড়তে থাকে তার শারীরিক যন্ত্রণা। সে মাঝে মাঝে কষ্টের যন্ত্রণায় ভ্যান চালাতে পারে না। অভাবে ভেঙ্গে পড়ে তার জীবন জীবিকা। মাকে নিয়ে চলে অনবরত সংগ্রাম। এরমধ্যে তার সাধ্যমত চিকিৎসা করাতে যেয়ে সর্বশান্ত হয়ে পড়ে। তখন আলোকিত কলারোয়া তার চিকিৎসার খরচ বহন করতে থাকে। সে কিছুটা সুস্থ বোধ করলেও চিকিৎসক তাকে এখন উন্নত চিকিৎসার জন্য অন্য ডাক্তার দেখাতে বলে। ডা: মাহমুদুল হাসান পলাশকে দেখালে তিনি এটিকে একটি বিরল রোগ হিসাবে চিহ্নিত করে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় ডা: শাহ আলম কে দেখানোর পরামর্শ দেন এবং ডা: শাহ আলমের সাথে সাক্ষাৎ করার ব্যবস্থা করবেন বলে তিনি আশ্বস্ত করেন। কিন্তু ডা: পলাশের পরামর্শ মত ঢাকায় গিয়ে উন্নত চিকিৎসা করার মত কোন আর্থিক সঙ্গতি তার নেই। দিনে দিনে তৌহিদের শিরার যন্ত্রণা বাড়ছে। এখন ভ্যান চালাতে তার খুবই কষ্ট হয়। কিন্তু সে মাকে নিয়ে জীবন যুদ্ধে হার মানতে রাজি নয়। সাথে সাথে অনার্স পড়তে চায়। বিরাট বড় স্বপ্ন নিয়ে তৌহিদ অসুখের কাছে হার মানতে রাজি নয়। শারিরিক কাঠামো যতই বাড়ছে ততই তার শিরার যন্ত্রণা বাড়বে বলে ডা: পলাশ জানান। ঢাকায় গিয়ে উন্নত চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ্য হয়ে জীবনে বড় হতে চায়। রোগে তৌহিদের সব স্বপ্ন চুরমার হতে বসেছে। সে সমাজের দানশীল, বিত্তবান মানুষ ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সহযোগীতা চায় তার চিকিৎসার জন্য।
প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে সুস্থ্য হয়ে ভ্যান চালিয়ে হলেও অনার্স- মাস্টার্স শেষ করতে চায় তৌহিদ। ঘুচাতে চায় কষ্টের কালো ছায়া, দেখতে চায় মায়ের মুখে মধুর হাসি। শুধুমাত্র অর্থের অভাবে সে উন্নত চিকিৎসা করাতে পারছে না। কলারোয়া বাজারের রফিক মাইকের প্রচার ভ্যান চালিয়ে এখন তার জীবন চলছে। সে অন্য কোন ভাড়া টানতে পারে না। সুস্থ্য ও স্বাভাবিক জীবন ফিরে পেতে চিকিৎসার ব্যয় নির্বাহের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সহ সমাজের বিত্তবান ও দানশীল মানুষের সহযোগীতা কামনা করেছেন তৌহিদ।

About The Author

Related posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: কপি থেকে বিরত থাকুন,ধন্যবাদ।